রাজশাহীর তানোরে এক বাড়িতে চুরির মামলার তদন্তে পুলিশ দুই ধরণের প্রতিবেদন দাখিল করেছে।পুলিশের দেয়া প্রতিবেদনে সংক্ষুব্ধ হয়ে বাদি আগামী ২০ আগস্ট আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করবেন বলে জানা গেছে।
মামলা নথিপত্র ঘেটে দেখা যায়, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট ও রাজশাহী জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট একেএম শওকত উদ্দীন রেন্টুর তানোর হিন্দুপাড়াস্থ বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে।
ঘটনাটি নিয়ে অ্যাডভোকেট নিজে বাদী হয়ে গত বছরের ২৬ আগস্ট তানোর থানায় অভিযোগ করেন।
কিন্তু অভিযোগের বিষয়টি আমলে নেননি তৎকালিন সময়ের থানার ওসি আব্দুস সালাম। বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হলে তার নির্দেশে অভিযোগটি গত বছরের ৩০ আগস্ট থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
মামলাটি তদন্তের জন্য প্রথমে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফফারের ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি বদলি হলে থানার আরেক উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেন। তিনি দায়িত্ব পেয়ে তানোর পৌর সদরের শিতলীপাড়া মহল্লার মাদকসেবী আজিজুল ও গোল্লাপাড়া মহল্লার জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে আদালতে গ্রেফতার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাদীর বাড়ি থেকে একটি সিলিং ফ্যান ও কিছু আববাবপত্র চুরি হয়। সাক্ষ্য প্রমাণে ও সোর্সের তথ্য অনুযায়ী ধৃত আসামি ও এলাকার মাদকসেবীরা সিলিং ফ্যান চুরি করে। মাদকসেবীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তারা এলাকায় আসা মাত্র গ্রেফতার করে সিলিং ফ্যান উদ্ধার করা হবে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৯ জুলাই মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন এসআই সাইফুল ইসলাম। প্রতিবেদনে চুরির ঘটনা সত্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে গ্রেফতারকৃতদের অব্যহতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করা হল মর্মে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।
বাদীর অভিযোগ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম গ্রেফতারকৃত আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। একারণে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়।
বাদীর কাছে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে তাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা এমন মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের জন্য নারাজী দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এনিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্ত তানোর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বলেছেন, মামলাটি তদন্তে সাক্ষ্য প্রমাণের অভাব ছিল। একারণে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়।
কিন্তু গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীর ও আজিজুলকে কোন ধরণের জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই কেন তাদেরকে মামলা হতে অব্যহতির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি এড়িয়ে যান এই পুলিশ অফিসার।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন