দেশে গত ৭ মাসে ৫২৬ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১১৯টি। রবিবার (১৩ আগস্ট) বগুড়ায় এক মতবিনিময় সভায় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন। এই পরিসংখ্যানের বাইরেও অনেক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, ২০১২ সালে দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৫০৮টি। অথচ এ বছরের ৭ মাসে ৫২৬ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ওই বছরে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৫৭ জন নারী। অথচ এ বছরের ৭ মাসেই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১১৯টি।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই পরিসংখ্যানের বাইরেও অনেক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। যেসব ঘটনা পুলিশ পর্যন্ত আসে না। গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় না।’
বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা, আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি উদ্বেগজনকভাবে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় ইউএনডিপির হিউম্যান রাইটস কর্মসূচির সহায়তায় এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এর আয়োজন করে।
বগুড়ায় ধর্ষিতা ও তার মাকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনা উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারের জন্য এটি বিষফোড়া।’
তিনি বলেন, ‘তুফানকাণ্ড বাংলাদেশকে লজ্জার মুখে ফেলে দিয়েছে। এ কারণে যাদের জন্য এ ঘটনা ঘটেছে, যে গোষ্ঠীর কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
বগুড়াসহ দেশজুড়ে নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানান রিয়াজুল হক।
বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অপরাধীরা উৎসাহিত হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নারী নির্যাতনের মামলার ৮৮ শতাংশ এবং ধর্ষণ মামলার ৯৫ শতাংশ আসামি খালাস পেয়ে যায়। তাহলে কি দেশে মাত্র ১২ শতাংশ নির্যাতন আর ৫ শতাংশ ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে?’
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘অপরাধ প্রমাণ করার ব্যর্থতার কারণে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে আসামিরা খালাস পাচ্ছে। আর বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অপরাধীরা উৎসাহিত হচ্ছে। তাতে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে। এ কারণে বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন