চোখে ‘বিরল রোগ দেখা দেয়ায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পরশুরাম গুথুমা কেবিএ আজিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ওহাব নবী (১৯)। ক্রমেই বাড়ছে ওহাব নবী’র বাম চোখের মাংস। চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা দিলেও কোন উন্নতি নেই ওহাব নবীর চোখে।
এদিকে ছেলের চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করতে পারছেন না তার কর্মক্ষম পিতা আবদুল গনি। ছেলের চিকিৎসায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
জানা যায়, ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার শান্তি কলোনি এলাকার আবদুল গনি ও জমিলা খাতুনের দ্বিতীয় সন্তান মো. ওহাব নবী। সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে জন্মের দুই বছর পর বাম চোখে এলনা সামান্য ফুলে ওঠে। স্বজনরা এটাকে (এলনা) মনে করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করায়। অস্বাভাবিক ভাবে মাংস বেড়ে বাম চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এমতাবস্থায় তাকে ২০১২ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দেড় থেকে দুই মাস চিকিৎসা করানোর পর টাকার অভাবে বাড়ি নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ওহাব নবীর চোখে টিউমার চিহ্নিত করে অপারেশনের পরামর্শ দেন। তবে এ চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে হবে বলে জানান তারা।
এদিকে ২ ছেলে ও ৫ মেয়েকে নিয়ে কোন মতে দিনাতিপাত করছেন কর্মক্ষম আবদুল গনি। এক সময় গ্রামে সামান্য ফার্নিচারের ব্যবসা থাকলেও ছেলের চিকিৎসা ও পরিবারের বরণ পোষণের জন্য তাও বিক্রি করে দিয়েছেন। শরীরে তেমন কোন শক্তি না থাকায় কোন ধরণের কাজ-কর্ম করতে পারছেন না তিনি। যার কারণে বিনা চিকিৎসা ঘরে অনেকটা বন্ধী জীবন যাপন করছে ওহাব নবী।
মো. ওহাব নবী পূর্বপশ্চিমকে জানায়, চিকিৎসকরা আমার চোখে টিউমার, অস্বাভাবিক মাংস বৃদ্ধি ও নীল রোগ হয়েছে বলে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। চোখের সমস্যা বেড়ে যাওয়া অনেকদিন ধরে স্কুলে যেতে পারছি না। চোখের সমস্যার কারণে সামনে এসএসসি পরীক্ষা দেয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। সুস্থ হয়ে উঠতে পারলে পড়া লেখা করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে পিতা-মাতার কষ্ট দূর করবো।
অসুস্থ ওহাব নবী’র পিতা আবদুল গনি জানান, ছেলে চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ব্যয় করেছি। এখন আর সামর্থ্য নেই। নিজে বেকার ছেলে মেয়েরা এখানো ছোট। তাদের দু’ মুঠো খাবার জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে। সরকার কিংবা সমাজের বিত্তবানরা আমার ছেলের চিকিৎসায় সহযোগিতা করলে কৃতজ্ঞ থাকবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর রোগীর স্বজনদের তাঁর সাথে দেখা করতে বলেন। তাদের সাথে কথা বলে চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাসও দেন তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন