বন্যাকবলিত চরাঞ্চলে ত্রাণের জন্য হাহাকার করছেন বানভাসিরা। সেখানে হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। ছয় দিন পার হলেও চরাঞ্চলের অনেক স্থানে মিলছে না ত্রাণ সহায়তা।
বানভাসিদের অভিযোগ, চরাঞ্চলগুলো দুর্গম হওয়ায় তাদের কাছে যায় না কেউ, বাড়ায় না সাহায্যের হাত। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও তা অপ্রতুল বা না দেওয়ার মতোই।
কুড়িগ্রামের ধরলা নদীবেষ্টিত ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব-পশ্চিম ধনিরাম চরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ফুলবাড়ী সেনা কল্যাণ সমিতি নামের একটি সংগঠন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ত্রাণ দিচ্ছে। ত্রাণের আশায় চরের ক্ষুধার্ত শিশুরা সারিবদ্ধ হয়ে চর ধনিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে লাইনে বসে পড়ে।
সংগঠনটির সদস্যরা শিশুদের হাতে তুলে দেন এক প্যাকেট মুড়ি ও কলা। শুকনা খাবারের এই প্যাকেট পেয়ে মহাখুশি শিশুরা। দৌঁড়ে গিয়ে তাদের বাবা, মায়ের হাতে তুলে দেয় সেই প্যাকেট।
সেনা কল্যাণ সমিতির পরিচালক সার্জেন্ট(অব.) মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম এবং সমিতির সদস্য বাবলু মিয়া পরিবর্তন ডটকমকে জানান, চরাঞ্চলের বির্পযস্ত বানভাসি মানুষের দুঃখ দুর্দশার খবরটি জানতে পেরে প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষের মাঝে শুকনা খাবার হিসেবে মুড়ি ও কলা বিতরণ করেছি।
শুকনা মুড়ির প্যাকেট পেয়ে শিশু সুমনা, পারভীন, শিউলি জানায়, বাড়িঘর বানের পানিতে ডুবে যাওয়ায় খাবারের খুব কষ্ট হচ্ছে তাদের। কেউ খাবার দিতে আসে না। আজ মুড়ি পাওয়ায় খুব ভালো লাগছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ আগস্ট থেকে কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলা- রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী ও কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট উপজেলায় স্মরণকালের বন্যা দেখা দেয়।
শুরু থেকে এসব এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ বানভাসি হয়ে পড়েন। চরাঞ্চলগুলো উপজেলা সদর থেকে দূরে হওয়ায় তাদের সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনা। বরং অনেক ক্ষেত্রেই এই বানভাসিদের এড়িয়ে যাওয়া হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন