শরীয়তপুরের ভেদরগগঞ্জ উপজেলায় গ্রাম্য সালিশের মধ্যমে এক গৃহবধূকে জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম থেকে বের করে দিয়েছে সমাজপতিরা।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরভাগা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আজগর হাওলাদার কান্দিগ্রামের সমাজপতি শরীফ সরদারের বাড়িতে ওই দরবার সালিশের আয়োজন করা হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় স্থানীয়রা ওই গৃহবধূর সঙ্গে তার প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলী মোল্যাকে (৪০) আটক করে। স্থানীয়দের অভিযোগ তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যায় গ্রাম্য শালিস ডাকা হয়। শালিসে ওই গৃহবধূ ও মোহাম্মদ আলী মোল্যাকে জুতার মালা পরানো হয়। এসময় মোহাম্মদ আলী মোল্যাকে সমাজপতি শরীফ সরদারের বাড়িতে কাজের জন্য রেখে দিয়ে ওই গৃহবধূকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ওই গৃহবধূ বাংলানিউজকে বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে ঘরে আমার দুই ছেলেকে ভাত খাওয়াচ্ছিলাম। এ সময় মোহাম্মদ আলী মোল্যা বাড়িতে টিউবয়েল স্থাপনের পাওয়ানা টাকা নিতে আমার ঘরে আসে। মোহাম্মদ আলী মোল্যাকে এলাকার লোকজন আমার ঘরে দেখে সন্দেহ করে এবং আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়। পরে সালিশ বৈঠক বসিয়ে সমাজের সবার সামনে আমাকে জুতার মালা
পরিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ওই গৃহবধূর শ্বশুর বাংলানিউজকে বলেন, অপবাদ দিয়ে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে আমার ছেলের বউকে জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ছাড়া করেছে সমাজপতিরা। আর মোহাম্মদ আলী মোল্যাকে জুতার মালা পরিয়ে সমাজপতি শরীফ সরদারের বাড়িতে কাজ করতে রেখে দিয়েছে। বর্তমানে আমার ছেলের বউ তার বাপের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সমাজের মুরব্বীরা যেই হুকুম দেয় সেই হুকুমই আমাদের মানতে হয়। তাদের হুকুম অমান্য করার ক্ষমতা আমাদের নাই। হুকুম অমান্য করলে আমরা গ্রামে থাকতে পারবো না। তাই তাদের হুকুম মানা ছাড়া কোনো উপায় নাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরে আলম খান বাংলানিউজকে বলেন, সালিশ বৈঠকে যেই কাজ করা হয়েছে তাতে সমাজের সবাই খুশি হয়েছে। তারা অন্যায় করেছে তাই তাদের শাস্তি হয়েছে।
সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মঞ্চুরুল হক আকন বাংলানিউজকে বলেন, আমি এ বিষয়ে জানতে পেরেছি। ঘটনার খবর নেওয়া হচ্ছে। কেউ যদি আইন হাতে তুলে নেয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন