দৈনিক সকালের খবর হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সেখানে কর্মরত সাংবাদিক-কর্মচারীরা। গত ছয় বছর ধরে প্রকাশিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে র্যাংগস গ্রুপের মালিকানাধীন এ পত্রিকাটি বন্ধের ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে পত্রিকাটির প্রিন্ট ভার্সন বন্ধ থাকলেও অনলাইন চালু থাকবে।
হঠাৎ করে পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়লেন সেখানে কর্মরত সাংবাদিকরা। পত্রিকাটি বন্ধ হওয়ার ফলে কর্মসংস্থান হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে সকালের খবর পত্রিকার সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, র্যাংগস গ্রুপের প্রতিনিধিরা তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে এসে পত্রিকাটি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। বন্ধের ঘোষণায় দুই শতাধিক সাংবাদিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়লেন। আগামী মাস থেকে আমাদের পরিবার চলবে কিভাবে তা অনিশ্চিত হয়ে গেল। এখন আমরা কোথায় চাকরি খুঁজব। আমাদের ভবিষ্যৎ কী? এসব বিষয় নিয়ে আমরা শঙ্কিত-চিন্তিত।
এর আগে সকালের খবর’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কমলেশ রায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাওয়া খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আপাতত পত্রিকাটির প্রিন্ট ভার্সন বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইন চালু থাকবে। র্যাংগস গ্রুপের প্রতিনিধিরা তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে এসে পত্রিকাটি বন্ধের ঘোষণা দেন। তবে ওয়েজ বোর্ডের নিয়ম-কানুন মেনে সংবাদকর্মীদের দেনা-পাওনা মিটিয়ে দেয়া হবে।
বন্ধের খবর শুনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) একাংশের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী ছুটে যান পত্রিকাটির অফিসে। এ সময় তিনি বেকার হয়ে পড়া এসব সাংবাদিকদের সান্ত্বনা দেন।
এ বিষয়ে সোহেল হায়দার চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, হঠাৎ করে এভাবে পত্রিকা বন্ধ করে দেয়ায় বেকার হয়ে পড়লেন পত্রিকাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক-কর্মচারীরা। যা খুবই দুঃখজনক। মালিকপক্ষ কর্মীদের দেনা-পাওনা মিটেয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আশা করব তারা সঠিক সময়ের মধ্যে এসব দেনা-পাওনা মিটিয়ে দেবে। চাকরি হারানো এসব সাংবাদিক-কর্মচারীর অধিকার আদায়ে সবসময় পাশে থাকবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন।
পত্রিকাটির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আজমল হক হেলাল বলেন, পত্রিকাটির প্রথম থেকেই আমারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নিয়মিত বেতন-ভাতা পেয়ে আসছিলাম কিন্তু আজ হঠাৎ করেই পত্রিকা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণায় আমরা শঙ্কিত। এতগুলো মানুষ একসঙ্গে কর্মসংস্থান হারিয়ে দিশেহারা যদিও মালিকপক্ষ সব দেনা-পাওনা মিটিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারপরও এসব সাংবাদিক এখন থেকে বেকার গেল। তাদের সংসার, জীবন, জীবিকা চলবে কীভাবে তারা আজ শঙ্কিত। মালিকপক্ষ এভাবে হঠাৎ বন্ধ না করে দিয়ে সময় দিতে পারত। সময় দিয়ে বলতে পারত তিন মাস পর পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হবে আপনারা চাকরি খুঁজে নেন। তা না করে হঠাৎ বন্ধ করে দেয়া হলো। এসব সংবাদকর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।
এছাড়া পত্রিকাটি বন্ধের ঘোষণায় পত্রিকাটির সাবেক ও বর্তমান অনেক সংবাদকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী মর্মাহত হয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের মে মাসে র্যাংগস গ্রুপের অর্থায়নে রোমো রউফ চৌধুরীর প্রকাশনায় নতুন আঙ্গিকে পত্রিকাটি বের হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন