উচ্চাকাঙ্ক্ষার লোভে অন্ধ গর্ভধারিণী শুনতে পাননি মায়ের কোলের শান্তির পরশ পেতে উম্মুখ চার মাস বয়সী শিশুর অব্যক্ত আকুতি। এক দুইবার নয়, চার মাস ১০ দিন বয়সী শিশু সন্তানকে নেয়ার জন্য বেশ কয়েকবার প্রশ্ন করে প্রত্যেকবার না জবাব পেয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন বিচারক।
নারীর এমন উত্তরে বিচারক নারীও লজ্জাবনত মস্তকে বাধ্য হয়ে শিশু ছেলেকে দেন বাবার জিম্মায়। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বরিশালের নির্বাহী হাকিম মাহমুদা কুলসুম মনির আদালতে।
তিনি বলেন, গর্ভধারিণী মা তার শিশু সন্তানকে নিতে অস্বীকার করায় হয়তো ভুল শুনেছেন ভেবে আবারো জানতে চান। এক, দুইবার নয়, কয়েকবারই জানতে চেয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই উত্তর ছিল না।
তিনি বলেন, এতটুকু শিশু। মা ছাড়া থাকা অসম্ভব। মানসিকভাবে অসুস্থ হলে ভিন্ন ছিল। তাই বার বার শিশুটির মায়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। ওই বিচারকের ধারণা ছিল হয়তো একটিবার হলেও শিশু সন্তানকে নিতে চাইবে মা। একবার হলেও বুকে জড়িয়ে ধরবে। কিন্তু তার ধারণা মিথ্যা প্রমাণ করলেন ওই নারী।
বিচারক বলেন, একটিবারও যদি মা হ্যাঁ বলত তাহলে তার কাছে দেয়ার আদেশ দেয়া হতো। কিন্তু প্রতিবারই তার না জবাব পেয়ে ঝুঁকি নেয়া হয়নি।
মা জাতিকে কলংকিত করা এই নারী হলো- বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের রামকাঠি এলাকার মোজাম্মেল হকের কন্যা ফাতেমা বেগম।
আদালত সূত্র জানায়, অর্থ-বিত্ত অর্জন করে আয়েশী জীবনযাপনের জন্য বিদেশে কাজের সন্ধানে যাওয়ার লক্ষ্য স্থির করে ওই নারী। তাই দুই মাস বয়সী শিশু সন্তানকে নিয়ে গিয়ে ওঠে পিত্রালয়ে। ডিভোর্স দেয় সন্তানটির বাবা আনিস সিকদারকে। সন্তান নিয়ে পিত্রালয়ে যাওয়ার দুই মাস পর তাকে দেখতে যায় আনিস।
উচ্চাকাঙ্ক্ষী নারী তখন জানায়, ৪ লাখ টাকায় চার মাস ১০ দিন বয়সী সন্তানকে বিক্রি করা হবে। সেই টাকা দিয়ে সৌদি আরবে গিয়ে কাজ করে অর্থ আয় করবে।
এই অবস্থায় ১৭ জুলাই সন্তানকে ফিরে পেতে ফাতেমা ও তার বাবা মোজাম্মেলসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন আনিস।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউনিয়া থানার পুলিশকে শিশু সন্তানসহ ৩ জনকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন