শুল্ক গোয়েন্দা টঙ্গী, গাজীপুরের একটি বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির নাম হলো গ্যালাক্সি সুয়েটার্স এন্ড ইয়ার্ন ডায়িং লিমিটেড। এটি ২০০৯ সালে বন্ড লাইসেন্স গ্রহণ করে।
বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি মামলা শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কর্তৃক বন্ড কমিশনারেটে দায়ের করা হয়েছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুল্ক গোয়েন্দার দল গত ১১ জানুয়ারি ২০১৬ প্রতিষ্ঠানের ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করে মজুদ যাচাই করে। এরপর দীর্ঘ অনুসন্ধান করে এ সম্পর্কিত শুল্ক ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া যায়।
অনুসন্ধান অনুযায়ী, ফ্যাক্টরিতে ৪২ ক্যাটাগরির কাঁচামালের মধ্যে ১৪ প্রকার কাঁচামাল অতিরিক্ত পাওয়া যায়। এই অতিরিক্ত কাঁচামালের পরিমাণ ২৩,২৯৬ টন।
অন্যদিকে ৩ প্রকার কাঁচামালের ঘাটতি পাওয়া যায়। এর পরিমাণ ৩২৯ টন।
অনুসন্ধানের তথ্য অনুসারে বন্ডেড প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত রফতানি দেখিয়ে রফতানির অবৈধ সুবিধা নিয়েছেন। এই অতিরিক্ত মালামাল খোলাবাজারে বিক্রি করার অপচেষ্টা ছিল।
একইসঙ্গে ঘাটতিসংশ্লিষ্ট মালামাল এরই মধ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করে স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে দিয়েছে।
এসব কাঁচামালের মধ্যে রয়েছে ইয়ার্ন, ডাইস কেমিকেল, পিপি দানা, কাগজ, থিনার, লবণ, বিএপিপি, এইচডিপি, এডহেসিব টেপ, ডুপ্লেক্স বোর্ড ও এলএলডিপি।
এসব কাঁচামালের শুল্কায়নকৃত মূল্য প্রায় ২১১ কোটি টাকা। ফাঁকিকৃত শুল্কসহ এসবের মূল্য প্রায় ২৭৬ কোটি টাকা।
রফতানিকে উৎসাহিত করার জন্য সরকার কতিপয় খাতে কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়ে থাকে। এসব কাঁচামাল কেবল রফতানিকৃত পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হবে এই শর্তে আমদানিকারকরা এই সুবিধা গ্রহণ করেন।
কিন্তু এক শ্রেণির বন্ডার বন্ড লাইসেন্স নিয়ে এসব কাঁচামাল রফতানিতে ব্যবহার না করে অধিক মুনাফা লাভের জন্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।
এই বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের ফলে সরকার যেমন রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
শুল্ক গোয়েন্দা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে এই বন্ড সুবিধার অপব্যবহারে রোধে কঠোর মনোভাব পোষণ করছে।
বন্ড অপব্যবহারের মামলায় বন্ড লাইসেন্স বাতিলসহ ফাঁকিকৃত শুল্ক আদায় এবং এই ফাঁকিকৃত শুল্কের দুইগুণ অর্থদণ্ড হতে পারে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন