পাইকারী বিক্রেতা ও কর্মকর্তারা চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য মিডিয়ার দায়িত্বহীন রিপোর্টকে দায়ী করে বলেছেন, এ ধরনের গুজবে অসাধু ব্যবসায়ীদের মজুতের চেষ্টায় চালের দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির আহ্বায়ক কে এম লায়েক আলী বলেন, চালের দাম অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।
একটি মিডিয়ার প্রচারণায় এ ধরনের ষড়যন্ত্র হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তির দাবি জানান।
নওগাঁর ধান ও চাল আড়তদার এবং ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিরোদ বরণ সাহা অভিযোগ করেন, এর আগে চলতি মাসে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল রিপোর্ট করে যে ভারত বাংলাদেশে চাল রফতানি নিষিদ্ধ করেছে। অথচ এটি ছিল একটি ভিত্তিহীন রিপোর্ট। এই রিপোর্টের পর এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী চাল মজুত করা শুরু করে এবং এতে চালের দাম বেড়ে যায়।
পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত সম্পর্কে সরকারের নিশ্চয়তা সত্ত্বেও দু’সপ্তাহে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৫/৬ টাকা বেড়েছে।
ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তারা জানান, ভারতের সরকারের আধা সিদ্ধ চাল রফতানি সম্পর্কিত একটি ভিত্তিহীন নোটিশ বিভিন্ন ব্যাংককে আমদানিকারকদের জন্য লাইসেন্স খুলতে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে। স্বার্থান্বেষী একটি মহল এই ভুয়া বিজ্ঞপ্তিটি সংবাদপত্রে সরবরাহ করে। এই বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রফতানি বন্ধের কথা ছিল।
এই সংবাদের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বেনাপোল ও ভোমরাসহ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়ে যায়।
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান বাসসকে ব্যবসায়ীদের মতের সমর্থনে বলেন, ভারতের ভুয়া বিজ্ঞপ্তিতে চালের দাম বেড়েছে। কারণ এই ভুয়া বিজ্ঞপ্তির খবরে সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা মজুত গড়ে তুলেছে।
তিনি বলেন, আগামী মাসে আমন মওসুম শুরু হলে ব্যবসায়ীরা চাল বিক্রি করতে বাধ্য হবে। তবে আমাদের খোলা বাজারে চাল বিক্রি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে মাঝারি মানের চালের দাম ইতোমধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এসেছে। হিলিতে এই চাল প্রতি কেজি ৪২ টাকা, বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দরে ৪১ টাকায় নেমে এসেছে। পাইকারী বাজারে যা ৪৭/৪৮ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৫০/৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ৩/৪ দিনের মধ্যে সবখানে চালের দাম কমে আসবে।
এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম চালের দাম বৃদ্ধির জন্য বিভ্রান্তিকর মিডিয়া রিপোর্টকে দায়ী করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারত চাল রফতানি বন্ধ করেনি। তাদের রফতানির জন্য ১০ মিলিয়ন টনের বেশি চাল রয়েছে। তিনি বলেন, এ ধরনের সংবাদ পরিবেশনা দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিপন্থী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন