‘প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করলে এটি সহজেই অনুমেয় যে, সরকার উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করছে এবং এর দ্বারা বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।’
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাতে হেয়ার রোডের নিজ বাসভবন থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার সময় বাসভবনের গেটে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া এক লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি।
বিমানবন্দরের উদ্দেশে বের হওয়ার সময় বাসভবনের গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রধান বিচারপতি (ছবি- সাজ্জাদ হোসেন)লিখিত বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সেই সঙ্গে আমি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়েও একটু শঙ্কিত বটে। কারণ, গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনরত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রবীণতম বিচারপতির উদ্ধৃতি দিয়ে মাননীয় আইনমন্ত্রী প্রকাশ করেছেন যে, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অচিরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রসাশনে পরিবর্তন আনবেন। প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কিংবা সরকারের হস্তক্ষেপ করার কোনও রেওয়াজ নেই। তিনি শুধুমাত্র রুটিনমাফিক দৈনন্দিন কাজ করবেন। এটিই হয়ে আসছে।’
শুক্রবার রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে বাসা থেকে বের হন প্রধান বিচারপতি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী সুষমা সিনহা। আধা ঘণ্টা পর রাত ১০টা ৩০ মিনিটে তারা বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে রওনা দেবেন তিনি।
ঢাকা: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, আমি অসুস্থ নই, ছুটি কাটানো শেষে আবার ফিরে আসবো।
আজ শুক্রবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর হেয়ার রোডের বাসভবন থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
রায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝানো হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকুক, এটাই আমি চাই।
এর আগে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে অস্ট্রেলিয়াগামী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের টিকেন কাটেন তিনি। আজ সকাল থেকেই তার বাসভবনে ভিড় জমান আত্মীয়-স্বজনরা। দেখা করতে যাওয়া আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে রয়েছেন প্রধান বিচারপতির ভাই ড. এন কে সিনহা, মেয়ে সীমা সিনহা, শ্যালিকা শীলা সিনহা, ভাতিঝি জামাই রাজমনো সিংহ, সুজিত সিংহ, রামকান্ত সিংহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১ আগষ্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। রায়ে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পক্ষ থেকে তার অপসারণেরও দাবি তোলা হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন