রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বেঞ্চে বসার ব্যাপারে সরকার বিরত করেনি, বরং তার বিরুদ্ধে বেশকিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠায় তার সহকর্মীরা তার সঙ্গে বসতে রাজি হননি বলে তিনি ছুটি নিতে বাধ্য হয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দেশবাসীর এটাই জানা উচিত যে- প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বেঞ্চে বসার ব্যাপারে সরকার বিরত করেনি, বরং তিনি ছুটি নিতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি প্রধান বিচারপতির লিখিত বক্তব্যকে বিভ্রান্তকর বলেও উল্লেখ করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আজকের বিবৃতিই প্রমাণ করে প্রধান বিচারপতি লিখিত বক্তব্যে যা বলেছেন তা সঠিক নয়।
এর আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তার বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর বলে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট।
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বৈঠকের পর রেজিস্ট্রার দপ্তরের দেয়া বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে অর্থপাচার, নৈতিক স্খলনসহ ১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। তার মধ্যে বিদেশে অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, নৈতিক স্ফলনসহ আরো সুনির্দিষ্ট গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
এ অভিযোগ প্রধান বিচারপতিকে জানিয়ে আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতি তার কাছে ব্যাখ্যা দাবি করলে তিনি সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। বরং বাকি বিচারপতিরা তার সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি পদত্যাগ করবেন বলেও জানিয়েছিলেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
বিবৃতির শেষে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির পদটি একটি সাংবিধানিক পদ। সেই পদের ও বিচার বিভাগের মর্যাদা রাখার স্বার্থে ইতঃপূ্র্বে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে কোনো প্রকার বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান করা হয়নি। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশক্রমে বিবৃতি প্রদান করা হলো।
শুক্রবার রাতে দেশত্যাগের আগে বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের প্রধান বিচারপতি জানান, ‘আমি অসুস্থ না, আমি ভালো আছি, আমি পালিয়েও যাচ্ছি না। আমি আবার ফিরে আসবো। আমাকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়নি। আমি নিজে থেকেই ছুটি নিয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি একটু বিব্রত, আমি বিব্রত। আমি বিচার বিভাগের অভিভাবক। আমি চাই না, বিচার বিভাগ কলুষিত হোক। বিচার বিভাগের স্বার্থে আমি সাময়িকভাবে যাচ্ছি। কারো প্রতি আমার কোনো বিরাগ নেই। বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকুক, এটাই আমি চাই।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে পরের দিন শনিবার সুপ্রিমকোর্ট একটি বিবৃতি আকারে বিজ্ঞপ্তি দেয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১ অক্টোবর আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি (মাননীয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহার মিঞা, মাননীয় বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মাননীয় বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মাননীয় বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার) এক বৈঠকে উক্ত ১১টি অভিযোগ বিষদভাবে পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, ওই সকল গুরুতর অভিযোগ মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে অবহিত করা হবে। তিনি ওই সব অভিযোগের ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে যদি ব্যর্থ হন তাহলে তার সঙ্গে বিচারালয়ে বসে বিচার কার্য পরিচালনা সম্ভব হবে না। ওই সিদ্ধান্তের পর ওইদিনই বেলা সাড়ে ১১টায় মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার হেয়ার রোডের বাসায় সাক্ষাৎ করে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সমূহ নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন।
কিন্তু দীর্ঘ আলোচনার পরও তার কাছ হতে কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা বা সদুত্তর না পেয়ে আপিল বিভাগের উল্লেখিত মাননীয় পাঁচজন বিচারপতি তাকে সুস্পষ্টভাবে জানান, এমতবস্থায় উক্ত অভিযোগ সমূহের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তার সঙ্গে একই বেঞ্চে বসে তাদের পক্ষে বিচার কাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। এ পর্যায়ে মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সুস্পষ্টভাবে বলেন যে, তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর মহামান্য রাষ্ট্রপতি মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ব্যতীত আপিল বিভাগের অন্য পাঁচ বিচারপতি মহোদয়কে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানান বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, মাননীয় বিচারপতি মো. ইমান আলী দেশের বাইরে থাকায় বঙ্গভবনে উপস্থিত থাকতে পারেননি। বাকিরা দীর্ঘ আলোচনায় এক পর্যায়ে মাননীয় রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা মহোদয়ের বিরুদ্ধে ১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সম্বলিত দালিলিক তথ্যাদি হস্তান্তর করেন।
আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির কাছে পদত্যাগের কথা জানিয়ে পরদিন ২ অক্টোবর এস কে সিনহা উল্লেখিত মাননীয় বিচারপতিগণকে কোন কিছু অবহিত না করে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে এক মাসের ছুটির দরখাস্ত প্রদান করেছেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, তৎপ্রেক্ষিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি মাননীয় বিচারপতি আবদুল ওহহাব মিঞাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির অনুরূপ কার্যভার পালনের দায়্ত্বি প্রদান করেন।আস
পাঠক মন্তব্য
IT IS A KUDETA , IT WILL NOT STAND.
Sir as attorney general , you are very ugly and your face look like "nary dog".
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন