প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) সব কমিশনারের বক্তব্যে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সম্ভবত সন্তুষ্ট হবে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে কি না এ নিয়ে সংশয় দলটির মধ্যে রয়েই গেছে।
সিইসি কেন হঠাৎ বিএনপির পক্ষে যায় এমন ইতিবাচক বক্তব্য রাখবেন, এর হিসাব দলটির নেতারা মেলাতে পারছেন না।
সিইসির বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া কী—জানতে চাইলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, কমিশনের বক্তব্য সবই ভালো। সম্ভবত সাংবিধানিক নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবে যা বলার কথা, সে ব্যাপারে তিনি কৃপণতা করেননি। বিএনপির অর্জন তিনি তুলে ধরেছেন। তবে তার অর্থ এই নয় যে সহায়ক সরকার ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সমস্যা সমাধান না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিইসির বক্তব্যে বিএনপি সন্তুষ্ট। তিনি ভালো ভালো কথা বলেছেন। গণতন্ত্রের অবদানের জন্য বিএনপির প্রশংসা করেছেন। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তিনি কত দূর কী করতে পারবেন, সেটি ভবিষ্যৎ বলে দেবে।
বিএনপির ব্যাপারে ইসির ইতিবাচক অবস্থান, বিশেষ করে সিইসির বক্তব্য রাজনৈতিক দলগুলোরও নজর কেড়েছে। কারো মতে, বিএনপিকে কেবল আস্থায় নেওয়ার জন্য ইসি ইতিবাচক অবস্থান দেখিয়েছে, বাস্তবে নির্বাচনের সময় ভূমিকা বদল করে সরকারের পক্ষেই তারা কাজ করবে। আবার অনেকে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কূটনৈতিক অঙ্গনসহ আন্তর্জাতিক মহলের সম্ভাব্য চাপের কারণেই কমিশন আগাম ওই অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছে। সিইসির রাজনৈতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া সরকারের দিক থেকে কী আসে, এ নিয়েও অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, সিইসির অবস্থা প্রধান বিচারপতির মতো হয় কি না তাও এখন দেখার বিষয়।
বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মতে, বিএনপি সম্পর্কে সিইসি সত্য কথা বলেছেন, ফলে তাঁর প্রশংসা করতেই হয়। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বর্তমান কমিশনকে আমাদেরও বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। তবে প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে এই সরকারের যে প্রতিক্রিয়া হয়েছে, আশা করি এই বক্তব্যের পর সিইসির ব্যাপারে একই প্রতিক্রিয়া হবে না। ’
গতকাল বিএনপির সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি সরকারের নানা ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে দলটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন, দেশ পরিচালনাকালে বিএনপি অনেক নতুন ধারার প্রবর্তন করেছে। সিইসি তাঁর বক্তব্যের পুরো সময়ই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান’ বলে সম্বোধন করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন