কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার একটি জলমহালে বিষ দিয়ে অর্ধকোটি টাকার মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের পূর্ব জাওয়ার গ্রামসংলগ্ন হুলিয়ারদাইড় জলমহালে বিষ প্রয়োগ করে দুর্বৃত্তরা।
এতে ওই দিন রাত থেকেই ওই জলমহালের মাছ মরে পানিতে ভেসে উঠতে থাকে।
বুধবার বিকাল পর্যন্ত জলমহালটির প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাছ মরে পানিতে ভেসে উঠেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের পূর্ব জাওয়ার গ্রামে হুলিয়ারদাইড় জলমহালটি জাওয়ার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ৫২ লাখ টাকায় তিন বছরের জন্য ইজারা নেয়। কিন্তু মামলা জটিলতার কারণে গত ১৪২৩ সনে ওই সমিতির লোকজন জলমহালটির দখল বুঝে পাননি।
চলতি বছর বর্ষা মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে জাওয়ার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির লোকজন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জলমহালটির দখল বুঝে নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিলেন।
আর এক মাস পর থেকেই জলমহালটির মাছ তুলে বাজারে বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই মঙ্গলবার দিনের কোনো এক সময় কে বা কারা জলমহলটির পানিতে বিষ ঢেলে দেয়।
পূর্ব জাওয়ার গ্রাম সমিতির সভাপতি হাজী আবুল হাসেম ভূঁইয়া বলেন, মূলত জাওয়ার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে জলমহালটির ইজারা নেয়া হলেও মাছ চাষের সঙ্গে গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ জড়িত। অনেকেই ধার-দেনা ও ঋণ নিয়ে মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।
এখন বিষ দেয়ায় জলমহালটির মাছ মরে ভেসে উঠছে। ফলে মাছ চাষের সঙ্গে জড়িত লোকজন নিঃস্ব হয়ে পড়বে বলে আশংকা জানান তিনি।
জাওয়ার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আবদুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, জলমহালটিতে মাছ চাষ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২০ লাখ টাকারও বেশি ব্যয় খরচ হয়ে গেছে। এ মৌসুমে প্রায় দুই কোটি টাকার মতো মাছ বিক্রি করা যেত। কিন্তু বিষ দেয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ টাকার মতো মাছ মরে ভেসে উঠেছে।
জাওয়ার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জিয়াউর রহমান জিয়া এ ঘটনার নিন্দা জানান।
তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী কমকতা সুলতানা আক্তার বলেন, বুধবার দুপুরে জলমহালটি পরিদর্শন করেছি। উপজেলা মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে পানিতে ভেসে ওঠা মরা মাছগুলো ফরেসনিক পরীক্ষার জন্য ঢাকার মহাখালীতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন করা হয়ে থাকলে জড়িতদের তদন্তপূর্বক বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন