রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক এখন কেমন, এই প্রশ্ন ঘুরে-ফিরে আসে। লাখ লাখ রোহিঙ্গা তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে বাংলাদেশে আসছে শুধুমাত্র প্রাণ বাঁচাতে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচার এখন গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি যে পাঁচদফা প্রস্তাব পেশ করেছেন তাও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে সবার কাছে। তবে অং সান সুচির ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হয়েছে। সেই সুচির জন্য বাংলাদেশ থেকে কিছু উপহার যাচ্ছে। যাচ্ছে কেন, এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারেনি।
মিয়ানমারের সঙ্গে এত কিছুর পরও বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। বরং সমঝোতার মাধ্যমে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে একটি স্থায়ী সমাধান চাইছে। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজামান খান কামালের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমার যাচ্ছে। উদ্দেশ্য রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। একই সঙ্গে বাংলাদেশে চলে আসা রোহিঙ্গাদের সসম্মানে ফেরত নেয়া।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল অং সান সুচিসহ আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য বেশ কিছু উপহার নিয়ে যাচ্ছেন। আর উপহার রোববার আড়ংসহ বেশ কয়েকটি অভিজাত দোকান থেকে কেনা হয়েছে। উপহারের মধ্যে রয়েছে— সিল্কের কাপড়, সিল্কের শার্ট ও রুপাখচিত আংটি। তবে অং সান সুচির জন্য যে উপহারটি রয়েছে তা আলাদা বাক্সে রেপিং করা হয়েছে। বাকিদের উপহার একইভাবে বিশেষ কাগজে মোড়া হয়েছে। তবে সুচির জন্য আলাদাভাবে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী (ইংরেজি সংস্করণ) বই উপহার থাকছে। প্রথমে পরিকল্পনা ছিল নৌকা উপহার দেয়ার। দলীয় প্রতীক হওয়ায় পরে তা বাতিল করা হয়।
এদিকে মিয়ানমার সফর উপলক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন টকিং পয়েন্ট নিয়ে গতকাল ব্যস্ত দিন কাটান। একই সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে টকিং পয়েন্ট চূড়ান্ত করেন। রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশের সামনে আসার পর প্রথমে মিয়ানমার সফর করেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। সফরের একটাই উদ্দেশ্য ছিল চাল আমদানির ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা। যা সোমবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভা বৈঠকে অবহিত করা হবে। এর আগে অবশ্য জাতীয় সংসদে এ নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়। আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার যাচ্ছেন সে দেশের আমন্ত্রণে। একইভাবে এটি পরে মন্ত্রিসভা বৈঠকে অবহিত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
মানবকণ্ঠ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন