বন্ধুত্ব বহুদিনের। একসঙ্গে কাজও করত দু’জন।বাড়ি একই এলাকায়। যাতায়াত ছিল। বছর ৩০-এর স্বপনের মাথায় আসেনি, প্রাণের চেয়ে প্রিয় বন্ধু এরকম কাজ করতে পারে। বউদি বলে যাঁকে সম্মান করত, তাঁর সঙ্গেই প্রেম? মেনে নিতে পারেনি সুমিতের কাজকর্ম। সব জানার পর সুমিতের সঙ্গে ঝামেলা হয়। তাকে বাড়ি আসতে বারণ করে দেয়। কিন্তু, কে শোনে কার কথা? তারপর থেকে মুখ দেখাদেখি একপ্রকার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দু’জনের।
গতরাতে স্কুল মাঠের সামনে দেখা হয়। শুরু হয় বচসা, হাতাহাতি।
স্থানীয়রা এসে থামিয়ে দেন। এরপর সবাই চলে যান। কিন্তু, বাড়ি ফেরেনি স্বপন, সুমিত। আজ সকালে খালের পাশ থেকে উদ্ধার হয় স্বপনের লাশ। পাশেই অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার হয় সুমিত।
স্বপন মাইতি। বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কাঁথির পেটুয়াঘাট কোস্টাল থানার বড়বানতালিয়ায়। বছর ৯ আগে বিয়ে হয় পম্পার সঙ্গে। ৭ বছরের এক সন্তানও আছে। সুখের সংসার ছিল। একই গ্রামে বাড়ি সুমিত পাল ওরফে তাপসের। স্বপন, সুমিতের বন্ধুত্ব বহুদিনের। একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়। স্বপনের বাড়ি যাতায়াত শুরু করে সুমিত। অভিযোগ, পম্পার সঙ্গে নাকি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সবকিছু জানতে পেরে প্রতিবাদ করে স্বপন। সুমিতের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়।
গতরাত ১০টার দিকে স্থানীয় স্কুল মাঠে দু’জনের ঝামেলা হয়। শুরু হয় হাতাহাতি। স্থানীয়রা খবর পেয়ে আসেন। দু’জনকেই ছাড়িয়ে দেন। বাড়ি চলে যেতে বলেন। স্থানীয়রা চলে গেলেও দু’জনের কেউ যায়নি। আজ সকালে একটি খালের ধার থেকে স্বপনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পাশেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল সুমিত। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি সুমিতকে গ্রেপ্তার করে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, খুনের পর আকণ্ঠ মদ্যপান করে সুমিত। তাই সে অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল।
ঘটনায় এখনও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেনি মৃতের পরিবার। স্বপনের স্ত্রী পম্পা অবশ্য অবৈধ সম্পর্কের কথা উড়িয়ে দিয়েছে। বলে, ও আমায় চায়, আমি ওকে কোনওদিন চাইনি। আমার ছেলে আছে, দেবতার মতো স্বামী আছে। ওকে আমার স্বামীও খুব ভালোবাসত। নিজের ভাইয়ের মতো ভালোবাসত। আমি ওর প্রস্তাবে রাজি হইনি। আমার সন্দেহ ওই খুন করেছে।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন