দোষী-নির্দোষী নিবির্শেষে কোনো মামলায় আসামি হলে নিয়ম অনুযায়ী আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের স্মরণাপন্ন হন তারা। সেখানে আসামি এবং বাদীর পক্ষের আইনজীবীরা মামলা পরিচালনা করে থাকেন। বিষয়টি সকলেই অবগত।
মক্কেলের (আসামি) পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবীর সঙ্গে সচরাচর মক্কেল এবং আইনজীবীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক-ই থাকে। তাদের মাঝে খুব বেশি দূরত্ব বা খারাপ সম্পর্ক থাকার কথা নয়। তবে এর ব্যতিক্রম যে হচ্ছে না তা কিন্তু নয়।
ঢাকা আইনজীবী সমিতি (বারের) সদস্য অ্যাডভোকেট জেসমিন নাহার মনির এক সময়ের মক্কেল টিটু গাজী ওরফে সবুজ গাজী তার জীবনের জন্য এখন হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, নারী ও শিশু নির্যাতন, অস্ত্র আইন, ডাকাতি, ইয়াবা ব্যবসাসহ হত্যা চেষ্টার মামলায় গাজীপুরের কাশেমপুর কারাগারের ৫ নং হাজতখানায় রয়েছেন টিটু গাজী।
কিন্তু এর আগে তার পক্ষে লড়েছেন আইনজীবী জেসমিন নাহার মনি। এখন এই আইনজীবী ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন এই টিটু গাজী।
এ নিয়ে আইনজীবী জেসমিন নাহার তার জীবন রক্ষায় গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর কোতোয়ালী থানায় পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
হাজতখানায় থেকে একজন আইনজীবীকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগে কোনো জিডির অনুসন্ধান করেছেন কি না- জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার এসএই মো. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন- হ্যা, আমাদের থানায় দায়ের করা জিডির বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতে (সিএমএম) আবেদন করেছি। আদালত অনুমতি দিলে বিষয়টি তদন্ত করব।
গত ৭ অক্টোবর করা ওই জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সর্বশেষ গত ৬ অক্টোবর রবি নম্বর (০১৮৪৩-৭৭৭২৪৪) থেকে অনেকবার ফোন করে হুমকি দেয়া হয়। এর আগে (০১৭৮০-৬২৬৩৬৭ এবং ০১৭৮৪-২৫০০৮৬) এসব নম্বর থেকেও তাকে হুমকি দেয়া হত বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এর আগে ২০১৬ সালের ৩০ মে ওই আইনজীবীর বাসায় গিয়ে হামলা করে তাকে গুরুতর আহত করে টিটু গাজী। ওইসময় আইনজীবীর দু’দাত ভেঙে ফেলেন তিনি। ওই ঘটনায় ২০১৬ সালের ১ জুন সুত্রাপুর থানায় একটি মামলা করে ওই আইনজীবী। এরপর মামলা তুলে না নিলে আইনজীবী ও তার স্বামীকে হত্যা করা হবে বলে ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হুমকি দেন টিটু গাজী। এর দুদিন পরেই আইনজীবী ও তার স্বামী আনিসুর রহমান প্রাতর্ভ্রমণে বের হওয়ার পর আসামি টিটু গাজী ওরফে সবুজ গাজীর সঙ্গে থাকা আরও দুই-তিনজন লোক হামলা চালিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুইজনকেই রক্তাক্ত যখম করে। ওইসময় জনতার গণধোলাইয়ের পর টিটু গাজীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর থেকে টিটু গাজী ওরফে সবুজ গাজী হাজতে থাকার কথা। হাজতে থাকার পরেও আইনজীবী ও তার স্বামীকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে আসছেন তিনি।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন