আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধনের জন্য নতুন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আবেদন চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এবার আবেদন করলেই নিবন্ধন দিয়ে দেবে না ইসি। নিবন্ধনের জন্য দেয়া শর্ত পূরণ করা হয়েছে কিনা তাতে কড়া নজর রাখবে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি।
.
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও নতুন করে নিবন্ধন দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, নতুন দল আইন-কানুন মেনে আবেদন করতে পারবে। ইসির শর্ত পূরণ করলে তাদের নিবন্ধন দেয়া হবে।
তিনি বলেন, এবার যারা নিবন্ধিত হবে কিংবা যারা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে; ইসির শর্ত পূরণের ব্যাপারে কোনো শিথীলতা প্রদর্শন করা হবে না। সব তথ্য যাচাই করে নতুন দলের নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে ৩০ অক্টোবর এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া ইসির নিবন্ধনে থাকা ৪০টি দল নিবন্ধন নেয়ার সময় তাদের শর্ত পূরণ করতে পারছে কিনা তা ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে জানাতে ১ নভেম্বর দলগুলোকে চিঠিও দিয়েছে কমিশন।
সূত্র জানায়, এবার নতুন দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কমিশন কড়া নজর রাখবে। এক নেতার একদল, এমন কোনো দলকে নিবন্ধন দেবে না ইসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, যারা নিবন্ধন নিয়েছেন তাদের অনেকেই শর্ত ঠিকমত পালন করছে না। শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে তাদের থেকে কিছু দলকে বাদও দেওয়া হতে পারে।
নতুন দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, কমিশনের তিনটি শর্তের মধ্যে একটি পূরণ হলে একটি দল নিবন্ধনের যোগ্য বিবেচিত হয়।
শর্তগুলো হল—
১) দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনো জাতীয় নির্বাচনের আগ্রহী দলটি যদি অন্তত একজন সংসদ সদস্য থাকেন।
২) যে কোনো একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী অংশ নেওয়া আসনগুলোয় মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পায়।
৩) দলটির যদি একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকে।
ইসি সূত্র জানায়, এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগ্রহী নতুন ৪৩টি রাজনৈতিক দল ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন করেছিল। কিন্তু ৪১টিই দল নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের ‘যোগ্যতা’ প্রমাণ করতে পারেনি। মাত্র দুটি দল শর্ত অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে কার্যালয় ও কমিটি থাকার তথ্য দিয়েছিল। এরপর তাদের নিবন্ধন দেয় কমিশন।
দল দুটি হল— বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।
ইসি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর এ পর্যন্ত ৪২টি দল নিবন্ধিত হয়েছে। এরমধ্যে স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল এবং আদালতের আদেশে ২০১৩ সালে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ রয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন