ঢাকার মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাসিম আহমেদ এমাজউদ্দিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসিফ শিকদার আদালতে বলেছেন, হত্যার উদ্দেশ্য তার ছিল না, তিনি কেবল শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন।
বুধবার বিকালে ঢাকার হাকিম আদালতে পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানিতেই নাসিমকে ছুরি মারার কথা স্বীকার করে নেন ২১ বছর বয়সী আসিফ।
ঢাকার মহানগর হাকিম মাহমুদা আক্তার পুলিশের সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে আসিফকে তিন দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞসাবাদের অনুমতি দেন।
গত ৬ নভেম্বর বাড্ডার পোস্ট অফিস গলিতে ছুরিকাঘাতে নিহত হন মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র নাসিম (২৪)। বিপিএলের খেলা নিয়ে জুয়ায় ‘বাধা দেওয়ায়’ তাকে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার ভোরে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নাসিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি আসিফকে (২১)। তার কাছ থেকে রক্ত মাখা একটি চাকু উদ্ধার করার কথাও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার এসআই এসএম কামরুল হাসান বিকালে আসিফকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
তিনি বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে ‘প্রকৃত রহস্য’ উদঘাটনের জন্য আসিফ শিকদারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
আসিফের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় বিচারক জানতে চান, আদালতকে তার কিছু বলার আছে কিনা।
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আসিফ বলেন, ঘটনার আগের দিন তিনি এলাকায় ক্যারাম খেলে বের হওয়ার সময় নাসিমসহ তিনজন মাতাল অবস্থায় তাকে মারধর করে। তার শোধ নিতে পরদিন সকালে তিনি বাসা থেকে বের হন। তাকে খুন করার ইচ্ছা আমার ছিল না। সে আমাকে যেভাবে মেরেছে, সেভাবে মেরে আমি তাকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলাম।
আসিফ আদালতে বলেন, পোস্ট অফিসের গলিতে নাসিমের সঙ্গে তার ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। নাসিম তার প্যান্ট ছিঁড়ে ফেললে তার ‘উলঙ্গ হয়ে পড়ার’ উপক্রম হয়।
সে অবস্থা থেকে বাঁচতে আমি ছুরি মারি। আমি তাকে মারতে চাইনি। একটা এক্সিডেন্ট ঘটে গেছে। ছুরি মারার সময় মনে হয়েছিল ঘুষি মারছি। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানান আদালতে উপস্থিত শিক্ষানবীশ আইনজীবী সাব্বির আহমেদ সজীব।
হত্যাকাণ্ডের পর নাসিমের ভাই ইফতেখার আহমেদ ফয়জুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তার ভাই মহল্লায় জুয়া খেলায় বাধা দেওয়ায় স্থানীয় রমজান ও তার সঙ্গীরা তাকে ছুরি মারে।
বিপিএল খেলাকে কেন্দ্র করে মহল্লার ছেলেরা জুয়া খেলে। এ নিয়ে রমজানের সঙ্গে নাসিমের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়েছিল।… মহল্লায় ওই ঘটনার বিচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই দুর্বৃত্তরা নাসিমকে ছুরি মেরে পালিয়ে যায়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন