নগদ টাকা আয়ের পাশাপাশি উন্নত জীবনের আশায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা তরুণীরা নানা ধরণের অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিনে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে একশ'র বেশি রোহিঙ্গা তরুণীকে উদ্ধার এবং অন্তত ৫০ জন দালালকে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। এ অবস্থায় এ ধরণের সামাজিক অপরাধ দমনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলোর সহযোগিতা চেয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
গত আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ জের ধরে সাত লাখ বেশি মিয়ানমার নাগরিকের অবস্থান রয়েছে কক্সবাজারের দু'ট উপজেলায় টেকনাফ ও উখিয়া। এর মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে অর্ধেকের বেশি। কিন্তু বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা তরুণীরা নানা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ায় সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা শঙ্কিত কক্সবাজারের পুলিশ প্রশাসন।
বিশেষ করে উন্নত জীবনের আশায় এই সব রোহিঙ্গা তরুণী আশ্রয় শিবির ত্যাগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
কক্সবাজারের পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরাজুল হক টটুল বলেন, 'রোহিঙ্গা তরুণীদের ভাষ্য মতে তারা সুন্দর জীবনের আশায়
তারা এই কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। আর তাদের অধিকাংশই মিয়ানমারে যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন।'
রোহিঙ্গা তরুণীদের অনৈতিক কাজে জড়িয়ে হার ক্রমশ বাড়তে থাকায় গত এক সপ্তাহে ধরে পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন হোটেল থেকে শতাধিক রোহিঙ্গা তরুণীদের উদ্ধারের পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালতে মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে ৫০ জন দালালকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান বলেন, 'কোনো রোহিঙ্গাকে নারীকে কেউ যদি নিয়ে যাচ্ছে ,কোন দালাল বা কোন ব্যক্তি আমরা যদি দেখি তখনই তাকে গ্রেপ্তার করছি।' তাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিচ্ছি।
প্রতারণা কাজে পা না বাড়ানোর জন্য আশ্রয় শিবির গুলোতে মাইকিং করা হয়েছে। এত বিশাল জনগোষ্ঠীর সামাজিক অপরাধ সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় মনে করছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের এই শিষ্য কর্মকর্তা। এই অবস্থায় আশ্রয় ভিত্তিক এনজিও গুলোর সহযোগিতা চান তিনি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড.এ কে এম ইকবাল হোসেন বলেন, এই সমস্ত সামাজিক যে অপরাধগুলো আছে, এই গুলো ক্ষেত্রে আমি বলবো আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধ ও সামাজিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করতে হবে।
মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে এইডস হেপাটাইস বি এর মতো নানা ধরনের প্রাণঘাতি রোগের প্রকপ রয়েছে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী সম্প্রতি পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৬৫ জনকে এইডস রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। সামাজিক মূল্যবোধের পাশাপাশি ধর্মীয় অনুশাসনও বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। কিন্তু অনৈতিকতা বাড়তে থাকলে এই ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন