জাল ভিসায় বিদেশে লোক পাঠানো এবং বাহরাইনে কর্মরত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৯ লাখ টাকা চুরি করে পালিয়ে আসাসহ একাধিক মামলার আসামি প্রতারক হাফিজ মোল্লা অবশেষে পুলিশের খাঁচায় বন্দি হলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় ছোট মাছুয়া এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে হাফিজকে মোল্লাকে (৩৫) গ্রেফতার করে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ। হাফিজ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার পশ্চিম রাজপারা গ্রামের আবুল হাসেম মোল্লার ছেলে। শুক্রবার হাফিজকে আদালদে সোপর্দ করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৯ বছর আগে হাফিজ বাহরাইন মানামা সিটিতে ওয়াদি মারমারা বুটিক নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। চাকরির একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশী মালিক আব্দুল মজিদ ২০১৫ সালের ১৩ মে হাফিজকে প্রতিষ্ঠানে রেখে ছুটিতে দেশে আসেন। প্রায় ২১ মাস পর আব্দুল মজিদ গত ৩ মার্চ বাহরাইনে ফিরে গিয়ে হাফিজের কাছে প্রতিষ্ঠানের হিসাব চান। হিসাব না দিয়ে গত ২৮ মার্চ হাফিজ বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। ওই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের মালিকের বড় ভাই আব্দুল জব্বার হাওলাদার বাদি হয়ে হাফিজকে আসামি করে মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আদালত মামলাটি পিরোজপুর জেলা গোয়েন্দা সংস্থাকে (ডিবি) তদন্তের আদেশ দেন। জেলা গোয়েন্দা সংস্থার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন তদন্তে উল্লিখিত টাকা চুরির প্রমাণ পান। গত ২১ অক্টোবর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।
এছাড়া প্রতারক হাফিজ মোল্লা বাহরাইন থাকাকালীন তার ভাইয়ের ছেলে আব্দুর রহমানের মাধ্যমে উপজেলার পশ্চিম রাজপারা গ্রামের আ. মজিদ ফকিরের ছেলে ইব্রাহীমের কাছ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার, উত্তর মিঠাখালী গ্রামের আনোয়ার হোসেনের পুত্র লুৎফর রহমানের কাছ থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার এবং দক্ষিণ বড়মাছুয়া গ্রামের মৃত শৈলেন সিকদারের ছেলে সুমন সিকদারের কাছ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তাদের জাল ভিসায় বাহরাইন পাঠান। পরে ওই তিনজনই প্রতারিত হয়ে বাহরাইন থেকে দেশে ফিরে আসেন। এ ঘটনায় প্রতারিত তিনজনই হাফিজকে আসামি করে পৃথক আরো তিনটি মামলা করেন।
এছাড়াও প্রতারক হাফিজ মোল্লার বিরুদ্ধে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের যুবকদের বিদেশ নেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। মঠবাড়িয়া থানার এএসআই নুরুল ইসলাম জানান, আদালতের ওয়ারেন্ট পেয়ে হাফিজকে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন