পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কথিত পীর মো. আলতাফ হোসেন ওরফে মিন্টু হুজুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চতুর্থ স্ত্রী আছমা বেগমকে বেধড়ক মারধর করে চার সন্তানকে রেখে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় আলতাফ ওরফে মিন্টু হুজুরকে গ্রেফতার করা হয়।
কলাপাড়া থানা পুলিশের এসআই জিয়া উপজেলার দীঘর বালিয়াতলী গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। কথিত পীর আলতাফকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে নাটকীয় কাহিনী।
কলাপাড়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. আলাউদ্দিন মিলন জানান, আছমা বেগমকে কতটা নির্দয় এবং নির্মমভাবে মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে তা তিনি মহিলা পুলিশের মাধ্যমে অবগত হয়েছেন।
নির্যাতিত আছমা জানায়, আলতাফ হোসেন কৌশলে মারধর নির্যাতন করে এক এক করে আরও চারজন স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি নিজে কাউকে তালাক দেননি। স্ত্রীরা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্তান-সন্ততি নিয়ে বাড়ি ছেড়েছে। পাঁচ স্ত্রীর সংসারে মোট নয় সন্তান রয়েছে তার। চতুর্থ স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো সন্তানেরও খোঁজ-খবর রাখেন নি তিনি। এ বিষয়ে কলাপাড়া থানায় আছমা একটি মামলা করেছেন।
আছমার অভিযোগ, তার স্বামী পীর সাহেব। হাজার হাজার মুরিদান বানায়। যার মধ্যে মহিলাও রয়েছে। অনৈতিক কাজের অভিযোগ করেন আছমা।
আছমা আরও জানান, তার স্বামী এলাকায় নিজেকে বড় হুজুর (পীর) হিসেবে জাহির করেন। পানি পড়া, তেল পড়া দেন। মুরিদ বানান। দেশের বিভিন্নস্থান, বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে বহু লোক আসে তার কাছে। সমস্ত রোগের ফিকির দেন। চিকিৎসা করেন। পীর সাহেব সেজে মহিলা-পুরুষকে মুরিদ করেন। মহিলা মুরিদগণ তাকে রাতে আপত্তিকর কায়দায় খেদমত করে। এসব কাজে বাধা দেয়ার কারণে কৌশলে যৌতুক বাবদ নগদ টাকা, গরু, জিনিস (স্বর্ণালঙ্কার) চায়। না দেয়ায় তার ওপর এমন নির্দয় নির্যাতন বহুবার হয়েছে। এনিয়ে বহুবার চেয়ারম্যানের কাছে শালিস বৈঠক হয়েছে। আবার অসহনীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় তার ওপর।
সবশেষ ১৪ নভেম্বর বেলা ১১টায় বেধড়ক মারধর করে বাড়ি ছাড়া করা হয়। শরীরের ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে পড়ে আছে। এ ঘটনায় আছমা বেগম কলাপাড়া থানায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন। তিনি তার স্বামীর সকল কর্মকাণ্ডকে রহস্যময় উল্লেখ করেছেন।
অভিযুক্ত আলতাফ হোসেন বলেন, আমার বদ নসীব। রাগের মাথায় একটু মেরেছি, এটি সঠিক। কিন্তু যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ঠিক নয়। চতুর্থ বিবি আছমা বেগম এমন কিছু কাজ করেছে যা এক কথায় অকারেন্স। বাকি চার বিবিগণও নিজেদের ভুলের কারণে চলে গেছেন। ভুলের সংশোধন তারা করতে পারেনি। আমি কাউকে অযথা হয়রানি করিনি।
বালিয়াতলি ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবির জানান, একবার চতুর্থ স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ পেয়ে তিনি ডেকে শাসিয়ে দিয়েছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন