একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা ও গাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ৬ আসামির বিরুদ্ধে আগামীকাল বুধবার রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
.
আব্দুল আজিজ ছাড়া মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), মো. আব্দুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), মো. নাজমুল হুদা (৬০) ও মো. আব্দুর রহিম মিঞা (৬২)।
ছয় আসামির মধ্যে মো. আব্দুল লতিফ কারাগারে আছেন। তবে বাকি পাঁচ আসামি পলাতক রয়েছেন।
মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
এর আগে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও শেখ মোশফেক কবির।
অন্যদিকে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন লতিফের পক্ষে আইনজীবী খন্দকার রেজাউল এবং পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্তআইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম ও মো. শাহিনুর ইসলাম।
গত ৯ মে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল রায়ের জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন।
বিচারপতি আনোয়ারুল হক মৃত্যুবরণ করায় ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। নবগঠিত ট্রাইব্যুনাল মামলাটি পুনরায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করে আদেশ দিলে গত রোববার থেকে প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশনের আনা সব সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরার কার্যক্রম শেষ করার পর যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ৮ মে দিন নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, আসামি আজিজসহ গাইবান্ধার ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। ওই বছরের ২৩ নভেম্বর প্রসিকিউশনের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ মামলায় মাত্র একজন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরে ঘোড়া মারা আজিজসহ সব আসামিকে পলাতক দেখিয়েই আদালতে মামলার বিচারিক কাজ শুরু হয়।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল আজিজ মিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পযর্ন্ত চার দলীয় জোটের অধীনে জামায়াত থেকে গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাসহ ১৩টি মামলা হয়।
সুন্দরগঞ্জ থানা শাখার জামায়াতের সক্রিয় সদস্য রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জুর বিরুদ্ধে দুটি রয়েছে। এছাড়া উপজেলা জামায়াত নেতা আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মানবতাবিরোধী অপরাধসহ তিনটি মামলা হয়।
আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী মুক্তিযুদ্ধের আগে ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা ছিলেন। পরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়।
১৯৭০ সাল থেকে জামায়াতের কর্মকাণ্ডে জড়িত নাজমুল হুদার বিরুদ্ধেও দুটি মামলা রয়েছে। আব্দুর রহিম মিঞা মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের কর্মী ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন