যশোরের মণিরামপুরে কাঁঠাল গাছের সাথে শেকলবন্দী ইউনুস আলী অবশেষে মুক্ত হয়েছেন। বুধবার রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাকে শেকলমুক্ত করে নিজ ঘরে তুলে দেন। ঘরে উঠতে পেরে ভীষণ খুশি ইউনুস আলী।
.
পরিবর্তন ডটকমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে শেকলবন্দী ইউনুসকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে এগিয়ে আসেন মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোকাররম হোসেন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী। তারা বুধবার রাত ৮টার দিকে ইউনুস আলীর বাড়িতে উপস্থিত হন। তখনো ইউনুস আলী পুকুর পাড়ের বাগানে শেকল বাঁধা অবস্থায় ছিলেন। পরে ইউনুস আলীকে শেকলমুক্ত করে নিজ ঘরে তুলে দেয়া হয়। সেখানে থাকা তিনটি ঘরের মধ্যে একটি ঘরে ইউনুসকে রেখে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও চৌকিদারকে দায়িত্ব দেন তার দেখভালের। তাৎক্ষণিকভাবে ইউএনও ঘোষণা করেন ইউনুসের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড করে দেওয়া হবে। পরিবারের সবাইকে বলে আসেন এই বাড়িতে ইউনুসের জন্য একটি নতুন ঘর তৈরি করে সেখানে তাকে রাখতে হবে। তার সাথে ভালো ব্যবহারসহ খাওয়া-পরা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
তবে ইউনুসের বোন হাজিরা খাতুনসহ স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ইউনুসের স্ত্রী আকলিমা ও পুত্র ইয়াকুব বিল্লাহ এ ঘটনার জন্য দায়ী। তাদের শাস্তি দেওয়া উচিত।
অন্যদিকে প্রশাসন এ ব্যবস্থা নেয়ায় গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি ইউনুস কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সবার উপস্থিতিতে বলেন, শেকলবন্দী দশা থেকে মুক্ত হওয়ায় তিনি ভীষণ খুশি। পরিবারের লোকদের মারপিট ও ভাঙচুর করার অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি ।
উল্লেখ্য, মণিরামপুর উপজেলার মাছনা মুনসিপাড়া গ্রামের মৃত ফজলু বিশ্বাসের পুত্র ইউনুস (৫৫)কে দীর্ঘ ৪ মাস ধরে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে একটি গাছের সাথে শেকলবন্দী করে রাখা হয়েছিল। ঝড়-বৃষ্টি-রোদ প্রকৃতির এই দুর্যোগ সহ্য করে তাকে দিনরাত এখানেই কাটাতে হয়েছে। তার স্ত্রী আকলিমা ও পুত্র ইয়াকুব বিল্লাহ এ অমানবিক ঘটনা ঘটায়। তাদের অভিযোগ মানসিক প্রতিবন্ধী ইউনুস বাড়ির লোকজনদের মারপিট করতেন এবং ভাঙচুর করতেন। এজন্য তাকে বাগানে গাছের সাথে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা এগিয়ে আসেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন