অদম্য মেধাবী সিরাজুলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভর্তির স্বপ্ন পূরণ করলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়া তার পড়ালেখার খরচ বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে বহন করা হবে বলে তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার আবু নাসের জানান, ঢাকার একটি দৈনিকে ‘ঢাবি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েও ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা সিরাজুলের’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি মন্ত্রীকে আকৃষ্ট করে।
মন্ত্রীর নির্দেশে তার দপ্তর থেকে সিরাজুলের সাথে যোগাযোগ করা হয়।
জানা যায়, সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী। মন্ত্রী সিরাজুলের ভর্তিসহ অন্যান্য খরচের টাকা পাঠিয়ে দেন।
জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার তালুক হরিদাস (রইচবাগ) গ্রামের চায়ের দোকানদার মৃত দবিয়ার রহমানের ছেলে সিরাজুল ইসলাম। জন্ম থেকে অভাবের সাথে নিত্য লড়াই করা সিরাজুল ইসলাম লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ব্যবসা শিক্ষা শাখায় জিপিএ-৪.৭৫ পায়।
এরপর বগুড়ার হাজী মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পায়।
বগুড়ায় থাকাকালীন বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলোতে হকারি করত সিরাজুল। শুধু তাই নয়, অনেক সময় বাড়িতে এসে টাকার জন্য অন্যের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করত। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে সবার ছোট সিরাজুল।
বড় ভাই রিয়াজুল ইসলাম একজন ভ্যানচালক। মেঝো ভাই রেজাউল করিম বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। রেজাউল ফেরি ও হকারি করে তার লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছেন।
এতো অভাবের মধ্যেও এ বছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধে অংশ নিয়ে ৩১তম মেধাক্রম অর্জন করেছেন সিরাজুল। ভর্তির সুযোগ হয়েছে ইংরেজি বিষয়ে।
শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধে অংশ নিয়ে ‘ঘ’ইউনিটে ৭২২তম মেধাক্রম অর্জন করে সিরাজুল।
সিরাজুলের মা রোজিনা বেগম জানান, ২০১২ সালের দিকে তার স্বামী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে খেয়ে না খেয়ে ২ ভাইয়ের লেখাপড়া চালিয়ে আসছেন।
মন্ত্রীর এ মহানুভবতায় তিনি তাকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন