নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর গাড়ির চাকা খুলে যাওয়ার ঘটনায় রীতিমত তোলপাড় চলছে। শুরুতে বিষয়টিকে খাটো করে দেখলেও পরবর্তীতে বিষয়টা নিয়ে বেশ সিরিয়াস খোদ মেয়র থেকে শুরু করে তাঁর ঘনিষ্টজনেরা। পুলিশ প্রশাসনও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। কেউ কেউ মনে করছে, এটা একটি নিছক দুর্ঘটনা। আবার কারো কারো ধারণা, দুর্ঘটনা সৃষ্টির জন্যও এটি একটি পরিকল্পনা হতে পারে। সে অর্থে অনেকটাই প্রাণে বেঁচে গেছেন আইভী।
এদিকে এ ঘটনা তদন্তে সিটি করপোরেশনের নগর ভবন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ কমিটির প্রতিবেদনের পরেই নেওয়া হবে আইনী পদক্ষেপ। ঘটনার প্রকৃত বিষয় জানতে ইতোমধ্যে ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা নগর ভবনে গিয়ে আইভীর সঙ্গে দেখা করে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করেছেন।
এখানে উল্লেখ্য, এর আগেও ওয়ান এলেভেনের সময়ে আইভীকে একটি উড়ো চিঠি পাঠিয়ে ১২ টুকরো করে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। যদিও আইভী সব সময়ে বলে আসছেন, তিনি আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না।
সিটি করপোরেশনের নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ২ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানী আর্মি স্টেডিয়াম মাঠে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের নামাজের যানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন মেয়র আইভী। যানাজাস্থলে যাওয়ার পথে বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকাতে গাড়ির পেছনের বাম পাশের চাকাটি বিকট শব্দে ফেটে যায়। তখন গাড়িতে ছিলেন আইভী। ওই সময়ে চালক নিজ বুদ্ধিমত্তায় দ্রুত থামিয়ে ফেলে। পরে দেখা যায় ওই চাকার কয়েকটি নাট আগে থেকেই খোলা ছিল আর বাকিগুলোও খোলার উপক্রম। পরে গাড়ির চাকা মেরামত করে আইভী যানাজাস্থলে পৌছান।
নগর ভবনের একটি সূত্র জানান, ঘটনাটি দুর্ঘটনাও হতে পারে। তবে বিষয়টিকে খাটো করে দেখার সুযোগ নাই। কারণ বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্টজন ছিলেন খন্দকার মোশতাক যিনি ছিলেন হত্যাকারীদের একজন। এর আগে সাধারণত এ ধরনের কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি আইভীকে। সে কারণেই এটাকে একটু বেশী গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তাছাড়া গাড়িটি সিটি করপোরেশনের গ্যারেজে যখন ছিল তখন কারা ভেতরে প্রবেশ করেছিল। কেউ চাকায় হাত দিয়েছে কী না সেটারও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে আইভীর ঘনিষ্ট একাধিক সূত্র জানান, বিষয়টিকে আইভীও বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। এ ঘটনার পর তিনি এখন আরো সতর্ক ও সজাগ। তিনি কিছুটা বিচলিতও। ওই ঘটনায় আইভীর কোন হতাহতের কিংবা দুঃসংবাদের সৃষ্টি না হলেও বিষয়টি এখন ভাববার বিষয়। কারণ এর আগে সাধারণত এ ধরনের কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি আইভীকে যিনি ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারীর পর থেকে সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে চেয়ারে রয়েছেন। তিনবার টানা জনপ্রতিনিধি হয়েছেন।
নিউজ নারায়ণগঞ্জ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন