ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু শাখারীদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে ১৮ লাখ টাকার দর উঠেছে। এ ছাড়া একই স্কুলের পিয়ন পদের দাম উঠেছে ৯ লাখ টাকা। ফলে এই নিয়োগ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সামাজিক ভাবে প্রভাবশালী দুই পক্ষের মধ্যে খুনোখুনির আশঙ্কার এক পর্যায়ে উচ্চ আদালতের দারস্থ হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। জানা গেছে প্রধান শিক্ষকের অবসর জনিত কারণে পদটি শূন্য হয়। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষক ও পিয়ন পদে বিজ্ঞপ্তি আহ্বান করা হয়। প্রধান শিক্ষক পদে ১০ জন ও পিয়ন পদে ৯ জন আবেদন করেন। রেজুলেন করে নিয়োগ বোর্ড গঠনের জন্য তোড়জড়ের মুহূর্তে প্রধান শিক্ষক পদে ১৮ লাখ ও পিয়ন পদে ৯ লাখ টাকার দর ওঠে। টাকা ভাগাভাগী ও যোগ্য ব্যক্তির নিয়োগ নিয়ে ঠণ্ডা লড়াই শুরু হলে স্কুল সভাপতি শেফালী খাতুন ও এলাকার মানুষ জেলা শিক্ষা অফিসার মকছেদুল ইসলামের কাছে পরামর্শ নেন। এরপর এলাকায় ফিরে গিয়ে সভাপতির পক্ষের লোকজন জোর পূর্বক নিয়োগ বোর্ড গঠনের রেজুলেশন করার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বিপাকে পড়েন। প্রধান শিক্ষক প্রার্থী পলিয়ানপুর গ্রামের আব্দুল আলীম জানান, তার কাছে সভাপতি ও তার ছেলে ১৮ লাখ টাকা দাবি করেছেন। পরবর্তীতে ১৬ লাখ টাকা না দিলে নিয়োগ দেয়া হবে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। শাখারীদহ গ্রামের মসিউর রহমানও টাকা দাবি করার কথা সংবাদ মাধ্যমকে জানান। স্কুলের বিদ্যোৎসাহী সদস্য মওলা বক্স জানান, প্রধান শিক্ষক ও পিয়ন পদে টাকা দাবি করছেন সভাপতির ছেলে ড্যানী আহম্মেদ। তাদের কারণে এলাকায় অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে অভিভাবক সদস্য শরিফুল ইসলাম তার জামাই আবদুল লতিফকে পিয়ন পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য ৯ লাখ টাকা নিয়ে ঘুরছেন এমনও অভিযোগও করেন কেউ কেউ। বিষয়টি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, আমি শুনেছি পদ কেনাবেচা হচ্ছে। এ অবস্থায় নিয়োগ বোর্ড গঠিত হলে খুনোখুনি হতে পারে। তিনি এই মুহূর্তে নিয়োগ বন্ধ রাখার পক্ষে মত দেন। ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার মকছেদুল ইসলাম জানান, নিজেরা সমঝোতা হয়ে না আসলে নিয়োগ বোর্ডের অনুমতি দেয়া হবে না। তবে যোগ্য শিক্ষককে নিয়োগ দিতে হবে। অসমর্থিত খবরে জানা গেছে উচ্চ আদালতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ প্রত্যাশী চার জনের রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে দুটি পদে আপাতত নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। তবে স্কুল সভাপতি শেফালী খাতুনের পক্ষে তার ছেলে ড্যনি আহম্মেদ জানান, আমরা আদালতের কোন নির্দেশনা পায়নি। তাছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্যের উপর নিয়োগের বিষয়টি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি তার মায়ের বিরুদ্ধে পদ বিক্রি ও টাকা দাবি করার অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন