৫৩ বছরের তাবলীগ জামায়াতের ইতিহাসে এবারই প্রথম বাংলায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এবার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশ তাবলীগ জামায়াতের কার্যালয় কাকরাইল মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা যোবায়ের।
বাংলায় করা মোনাজাতের আকুতি ছিল এক অনন্য মধুর সুরের মূর্ছনা। ছিল আকুতিভরা করুণ প্রার্থনায় আল্লাহর দরবারে ডাকাডাকি। মাওলানা যোবায়েরের করুণ প্রার্থনার সাথে সাথে লাখো মুসল্লির হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসছিল করুণ আর্তনাতের প্রার্থনা।
বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হেফাজত, হেদায়েত ও কল্যাণ কামনায় আখেরি মোনাজাতে অশ্রুসিক্ত নয়নে আমিন আমিন ধ্বনিতে শেষ হলো ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। রোববার বেলা ১০টা ৪০ মিনিট থেকে শুরু হয়ে ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ৩৫ মিনিটব্যাপী আখেরি মোনাজাতে প্রথম ১৪ মিনিট আরবি ও পরে বাংলা ভাষায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ব তাবলীগ জামাতের অন্যতম সূরা সদস্য বাংলাদেশের কাকরাইল জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ যোবায়ের।
আখেরী মোনাজাতে লাখো লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি নিজ গুনাহ মাফ, সারা দুনিয়ার কল্যাণ কামনা, আল্লাহর নৈকট্য লাভ, দুনিয়াতে হানাহানি ও মারামারিমুক্ত শান্তিময় সমাজ কামনা এবং ইহলোক ও পরলৌকিক সুখ-শান্তি কামনা করে আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে আমিন আমিন ধ্বনিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এবার বাংলায় মোনাজাত করায় বাংলা ভাষাভাষি দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা মোনাজাতের মর্ম উপলব্ধি করতে পারে এবং নিজ নিজ গুনাহর কথা স্মরণ করে তারা মহান পরওয়ারদিগার আল্লাহর দরবারে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্যের এক অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপনের মধ্য দিয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানান।
আখেরি মোনাজাতের আগে ভোর থেকে হেদায়েতি বয়ান করেন তাবলীগ জামায়াতের জ্যেষ্ঠ মুরুব্বিরা। মুরুব্বিরা নবী করিম (সা:)-এর তরিকা মনে করিয়ে দিয়ে গোনাহগার বান্দাদের দোয়া কবুল, আল্লাহর রাস্তায় জানমাল কোরবানি দেওয়ার তৌফিক কামনা, মুসলমানদের জানমাল ও দেশের হেফাজত, ইমানি জিন্দেগি, আল্লাহ ও তার হাবিব রাসূল (সা:)-এর সুন্নতের পথে চলা এবং দাওয়াতি কাজের কৌশল সম্পর্কে হেদায়েতি বয়ান করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন