রোববার রাত সাড়ে ১১টা। জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বর থেকে ফোন আসে সিলেট মহানগর পুলিশের জরুরি বিভাগে। অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি বলেন, ‘নগরের টিলাগড় এলাকার সিলেট সরকারি কলেজের সামনে এক নারী পড়ে আছেন। তিনি প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।’ সেখান থেকে শাহ পরাণ থানা-পুলিশ মা ও নবজাতককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
শাহ পরাণ থানা সূত্রে জানা যায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন। তিনি দেখতে পান, শীতে জবুথবু হয়ে পড়ে আছেন এক নারী। পাশে সদ্য জন্মানো নবজাতক। তাদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। নারীটি মানসিক ভারসাম্যহীন। ওসি আখতার হোসেনের জিম্মায় ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে মা ও শিশুকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।
ওসি আখতার হোসেন গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় ওই মায়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছিল না। পরে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মা ও নবজাতককে সেবার জন্য একজন নারীকে রাখা হয়েছে। আমি নিজে বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছি।’ হাসপাতালের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রচণ্ড শীতে নবজাতকটি আরও কিছু সময় খোলা পরিবেশে থাকলে বাঁচানো সম্ভব হতো না। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ রয়েছে। ওই মায়ের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পুলিশি সেবা পেতে জাতীয় হেল্প ডেস্ক হিসেবে গত ১২ ডিসেম্বর ‘৯৯৯’ নম্বরটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। বিনা খরচে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে নাগরিকেরা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্সের সেবা নিতে পারবেন। মুঠোফোন ও টেলিফোন উভয় মাধ্যমে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা যাবে। কোনো অপরাধ ঘটতে দেখলে, প্রাণনাশের আশঙ্কা দেখা দিলে, কোনো হতাহতের ঘটনা চোখে পড়লে, দুর্ঘটনায় পড়লে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে, জরুরিভাবে অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হলে ওই নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাওয়া যাবে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জরুরি এই সেবা সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এর মাধ্যমেই মা ও নবজাতককে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন