রাজধানী লাগোয়া আশুলিয়ায় স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেয়ার জেরে রুলিয়া আক্তার ওরফে ফালানিকে (২০) শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ি উভয়ই পলাতক রয়েছে।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউপির পশ্চিম গাজীবাড়ি এলাকায় নিজ বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত রুলিয়া আক্তার আশুলিয়া থানাধীন শিমুলিয়া ইউপির কালিকাপুর এলাকার দিনমজুর আওলাদ হোসেনের মেয়ে এবং পশ্চিম গাজীবাড়ি এলাকার নাজমুল হোসেনের স্ত্রী।
পলাতক নাজমুল আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউপির পশ্চিম গাজীবাড়ি এলাকার দুবাই প্রবাসী নুরুল হকের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস আগে নিজেদের পছন্দমতো পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয় নাজমুল ও রুলিয়া আক্তারের। বিয়ের সময় নাজমুলকে ২০ হাজার টাকা ও দেড় ভরি স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক দেয়া হয় রুলিয়ার পরিবার থেকে। বিয়ের পর তিন মাস ভালোই চলছিল তাদের। এরপর স্বামী নাজমুল পাশের বাড়ির এক মেয়ের সাথে পরকীয়ায় সম্পৃক্ত হয়। বিষয়টি তিন-চার মাস ধরে চলতে থাকলেও এ বছরের ১৯ জানুয়ারি রুলিয়া আক্তার স্বামী নাজমুলের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চায়। নাজমুল বিষয়টির সত্যতা জানিয়ে এ ব্যাপারে কাউকে কিছু বলতে নিষেধ করে। পরে বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও শাশুড়ির সাথে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে স্বামী ও শাশুড়ি মিলে তাকে গলাটিপে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে।
হত্যার পর নিহতের বাবা আওলাদ হোসেনকে মোবাইলে নাজমুল জানায় তার মেয়ের খিঁচুনি হচ্ছে। সে তাকে দ্রুত তাদের বাড়িতে আসতে অনুরোধ করে। বাবা আওলাদ পরে এসে জানতে পারেন তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। অবস্থা বেগতিক দেখে রুলিয়ার স্বামী ও শাশুড়ি বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে গতকাল সকালে শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রচার করতে থাকে রুলিয়া আত্মহত্যা করেছে মর্মে থানা পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রুলিয়া আক্তারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে বলে জানান। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলেও তিনি জানান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন