রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা নেতারা শুরুতেই ৬ দফা দাবি দেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা এবার ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করার চেষ্টা করছে। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্প থেকে মিয়ানমারে ফিরে যাবেন না আশ্রিতরা। সরকারের সব ধরণের আন্তরিকতা ও সহায়তা থাকলেও কয়েটি এনজিও’র উস্কানিতে অস্থিরতা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে গত গত ১৫ জানুয়ারি মিয়ানমার ও বাংলাদেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের মধ্যে চুক্তি হয়। তার পরই বিক্ষোভ শুরু করে প্রত্যাবাসনে থাকা রোহিঙ্গারা। ঢাকা ও নেপিডোর যৌথ উদ্যোগে চুক্তির বাইরে ৫ দফা দাবি দিয়ে কক্সবাজারের শিবিরের বাইরে বিক্ষোভ করছে তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্প থেকে মিয়ানমারে ফিওে যেতে চায় না আশ্রিতরা।
রোহিঙ্গাদের দাবির মধ্যে রয়েছে : আশ্রয়কেন্দ্রের বদলে নিজভিটায় ফেরা, নিজধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা, লুন্ঠিত সম্পদ ফেরত, জাতিসংঘের মাধ্যমে পূর্ণ নিরাপত্তা ও চলাচলের স্বাধীনতা।
তবে রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন, তাদের এই স্মারকলিপি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। স্মারকলিপি চূড়ান্ত হলে তা বাংলাদেশর কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরা হবে। তাদের দাবি, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৪০টি গ্রামের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন তারা।
সচেতন নাগরিকরা বলছেন, সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা ও আন্তরিকতার পরেও নতুন করে এমন শর্ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সংকট উস্কে দিচ্ছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতেই কয়েকটি এনজিও বিক্ষোভের জন্য ইন্ধন দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষক আকতার চৌধুরী বলেছেন, সরকার যেখানে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে রোহিঙ্গাদের দাবি দেওয়ার মানেই হচ্ছে এটা একটি গভীর ষড়যন্ত্র। বিষয়টি নিয়ে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তবে, এনজিওগুলোকে সবার আগে সরিয়ে নিতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের কমিশনার মোঃ আবুল কামাল বলেছেন, রোহিঙ্গাদের যেসবল শর্ত সেগুলো সতর্কতার সাথেই নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার নিরাপদ ও স্বেচ্ছমূলক প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবাসনের ওপরে জোর দিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তাবে আগামী সপ্তাহে শুরু করে দুই বছরের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। ঢাকা ১৫ হাজার করে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেবার শর্ত দিলেও সপ্তাহে মাত্র দেড় হাজার রোহিঙ্গা ফেরাতে রাজি হয়েছে নেপিডো। এই লক্ষ্যে রাখাইনে ৬২৫টি আশ্রয় শিবিরে ৩০ হাজার মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সবশেষ বৈঠকে। রোহিঙ্গাদের ২৩ জানুয়ারি থেকে ফিরিয়ে নেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার। সূত্র : যমুনা টিভি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন