নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ আহাম্মেদ জয়কে শ্বাসরোধে হত্যার পর গুম করার উদ্দেশ্যে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
তবে, সমিতির হিসাব নিয়ে দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানায় পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বড়ালু এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এর আগে সোমবার দুপুরে বড়ালু এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পারভেজ আহাম্মেদ জয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ আহাম্মেদ জয়ের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে ফাঁসির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।
পারভেজ আহাম্মেদ জয় বড়ালু এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে। এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। স্থানীয় মেঘনা সমবায় শ্রমজীবী সমিতিতে চাকরি করে আসছিলেন তিনি।
আটককৃতরা হলেন- বড়ালু এলাকার মেঘনা সমবায় শ্রমজীবী সমিতির শারমিন আক্তার, সোহাগ মিয়া ও জাহাঙ্গীর আলম।
নিহতের পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেঘনা সমবায় শ্রমজীবী সমিতিতে মাঠপর্যায়ে কাজ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষে লেখাপড়া করে আসছেন পারভেজ আহাম্মেদ জয়।
ওই সমিতির মালিকানা পার্টনার হিসেবে ছিলেন পারভেজ আহাম্মেদ জয়ের মামা রুবেল মিয়া। রুবেল মিয়া মালিকানা পার্টনার হিসেবে সমিতিতে প্রায় ১০ লাখ টাকা রেখেছিলেন।
অন্যান্য পার্টনারদের সঙ্গে রুবেল মিয়ার কথা কাটাকাটি হলে তিনি ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে সমিতি থেকে চলে যান। সমিতিতে থেকে যায় আরও ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ওই টাকা উত্তোলনের জন্য মামা রুবেল ভাগিনা পারভেজ আহাম্মেদ জয়কে দায়িত্ব দেন।
বেশ কয়েক বার পারভেজ আহাম্মেদ জয় সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মামা রুবেল মিয়ার পাওনা টাকার বিষয়ে হিসাব-নিকাশ চায়। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে পারভেজ আহাম্মেদ জয়ের বাকবিতণ্ডা হয়।
এদিকে, সমিতির কার্যালয়টি বড়ালু এলাকার শীতলক্ষ্যা তীরে অবস্থিত। গত রোববার দুপুরে সমিতির কাজে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বের হন পারভেজ আহাম্মেদ জয়।
অনেক সময় সমিতির কাজ করতে গিয়ে রাত ৯টা বা কোন কোন সময় ১০টাও বেজে যায়। রাত পার হয়ে গেলেও পারভেজ আহাম্মেদ জয় বাড়ি ফিরেনি। সোমবার দুপুরে সমিতির কার্যালয়ের পেছনের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা পারুল বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করবেন। আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আশা করা যায় অল্প সময়ের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হবে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন