অস্ট্রেলিয়ায় সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে বাংলাদেশি এক নারী গ্রেফতার হওয়ায় সে ব্যাপারে তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে ওই নারীর বোনের হামলার শিকার হয়েছে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সিটিটিসি)এক সদস্য। পরে নারী পুলিশ সদস্যের সহায়তায় হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতের নাম আসমাউল হুসনা ওরফে সুমনা (২২)। সোমবার গ্রেফতার করার পর দশ দিনের রিমান্ডে চেয়ে আজ তাকে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, সুমনা এবং অস্ট্রেলিয়ায় গ্রেফতার হওয়া মোমেনা সোমা দু’জনই জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বড় বোনের হাত ধরে ছোট বোন সুমনাও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে।
সিটিটিসির উপকমিশনার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় সন্দেহভাজন ওই নারীর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে ওই নারী আমাদের এক সদস্যকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করে। এরপর তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। কেন সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে এবং কী কারণে তার বোনকে অস্ট্রেলিয়ায় সন্দেহ করা হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদে তা জানা যাবে।’
সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সুমনাকে গ্রেফতার করেছি। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
গত ৯ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার উত্তর মেলবোর্নে এক ব্যক্তিকে ঘুমন্ত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করার পর বাংলাদেশি নারী শিক্ষার্থী মোমেনা সোমাকে আটক করে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ। ওই দেশের পুলিশের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সে অস্ট্রেলিয়ান ওই ব্যক্তিকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।
ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা জানান, অস্ট্রেলিয়ায় সোমা নামের এক বাংলাদেশি নারী গ্রেফতার হওয়ার পর কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি ইউনিট মিরপুরের পূর্ব কাজীপাড়ার বাসায় যায়। সিটিটিসি’র কর্মকর্তারা সোমার বাবা ও ছোট বোন সুমনার সঙ্গে কথা বলে। কথা শেষ হওয়ার আগেই হিজাবের নিচে লুকিয়ে রাখা একটি ছুরি নিয়ে সুমনা এক সিটির এক কর্মকর্তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছুরিকাঘাতে ওই কর্মকর্তার শার্ট ছিড়ে গায়ে ছুরির আঁচড় লাগে। আচমকা এই আক্রমণ সামলিয়ে ওই কর্মকর্তা অন্যদের সহায়তায় সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করেন। পরে কাফরুল থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে।
সিটিটিসির ওই কর্মকর্তা বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় গ্রেফতার হওয়া মোমেনা সোমা এবং ঢাকায় গ্রেফতার হওয়া তার ছোট বোন সুমনা দু’জনই আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের ভিডিও দেখে দেখে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয়েছেন। তবে তারা সেল্ফ র্যাডিক্যালাইজড নাকি কারও মাধ্যমে তারা র্যাডিকাল হয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য সুমনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন