“আমি চিৎকার করলে স্যার আমার গলা চেপে ধরে বলে, ‘তোর বাবা-মাকে বললে তোকে মেরে ফেলবো’”, কথাগুলো বলছিল যশোরের চৌগাছা উপজেলার শিশু শাপলা (ছদ্মনাম)। স্থানীয় একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী সে।
মূল ঘটনা গতকাল সোমবারের। সেদিন শাপলাকে তার গৃহ শিক্ষক শারীরিকভাবে শ্লীলতাহানী করেন বলে অভিযোগ করেন তার বাবা।
অভিযুক্ত ওই গৃহশিক্ষকের নাম আবদুল মুজিদ (৬৫)। তিনি একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে আবদুল মুজিদ অবসরে রয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মজিদের বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন শাপলার বাবা।
আমাদের সময়কে শাপলার বাবা বলেন, শাপলা স্থানীয় একটি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত আবদুল মুজিদ প্রায়ই শাপলাকে পড়ানোর বাড়িতে আসতেন। কিন্তু ‘অসৎ চরিত্রের’ হওয়ায় তাকে (মুজিদ) পড়াতে আসতে নিষেধ করেন তিনি।
গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় শাপলার বাবা বাড়ি ছিলেন না। সে সময় বাড়িতে ঢুকে শাপলার মাকে আবদুল মুজিদ বলেন, ‘তোমার মেয়েকে পড়াতে এসেছি।’
শাপলার বাবা আরও জানান, আবদুল মুজিদের কথায় রাজি হননি তার স্ত্রী। এর পরও ‘আমি দুই-তিন মিনিট পড়া দেখিয়ে দিয়ে চলে যাব’ বলে শাপলার পড়ার ঘরে ঢুকে পড়াতে থাকেন মুজিদ। এক পর্যায়ে বাবার বাড়ি থেকে ফোন আসলে বাইরে বের হন শাপলার মা। কিছুক্ষণের মধ্যেই মেয়ের চিৎকার শুনে ঘরে গিয়ে দেখেন আবদুল মুজিদ ঘরে নেই, আর মেয়ে কান্নাকাটি করছে।
কান্নার কারণ জানতে চাইলে শাপলা বলে, স্যার (আবদুল মজিদ) তার শরীরের আপত্তিকর স্থানে হাত দিয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে শাপলা বলে, “আমি চিৎকার করলে স্যার আমার গলা চেপে ধরে বলেন, ‘বাবা-মাকে বললে তোকে মেরে ফেলবো।’” এর পর মুজিদ ঘর থেকে চলে যান।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় অভিযুক্ত আবদুল মুজিদের সঙ্গে। কথোপকথনে তিনি পুরো ঘটনাটি সাজানো বলে জানান। তিনি বলেন, ‘তারা প্রাইভেট পড়াতে বলায় আমি প্রাইভেট পড়াতে যাই। তাদের সাথে পূর্ব বিরোধের জেরে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার মানহানি করা হচ্ছে। আমি কোর্টে এসেছি এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, ‘আমি ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেছি। গায়ে হাত দেয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন