জীবননগরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারক প্রেমিক তার দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের সময় মোবাইলে দৃশ্য ধারণ ও তার নিকট থেকে স্বর্ণের গহণা কেড়ে নেয় ধর্ষকরা। যাওয়ার সময় এ ঘটনা ফাঁস করলে নগ্ন দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়ে যায় ওই তিন ধর্ষক। বাড়ি ফিরে ধর্ষণের শিকার হওয়া তরুনীটি বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের জানালে সামাজিক অবস্থানের কথা বিবেচনা করে তারা চুপ হয়ে যায়। ঘটনার দুই দিন পর মঙ্গলবার বিকেলে প্রতারক প্রেমিক অলঙ্কার ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে আবারও ওই তরুণীকে মোবাইলে ডাকে। ধর্ষিত তরুণীর পরিবার এলাকাবাসীর সহায়তা নিয়ে ধর্ষক প্রেমিক আরিফকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় তিন ধর্ষকের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী তিন ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের রাখালশাহ পাড়ার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে দোকান কর্মচারী আরিফুল ইসলাম আরিফ (২৫) একই উপজেলার নতুন তেঁতুলিয়ার গ্রামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত রোববার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা দিয়ে তরুণীটি বাড়ি ফেরে। ওই দিন বিকালে প্রেমিক আরিফ দেখা করার কথা বলে মোবাইলে তাকে ডেকে নেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করার পর তারা খয়েরহুদা গ্রামের মাঠপাড়ায় যায়। ওখানে একটি ভূট্টাক্ষেতে পূর্ব থেকেই তার দুই বন্ধু একই গ্রামের আজিল হোসেনের ছেলে জুয়েল (২৩) ও আব্দুর রশিদ দেওয়ানের ছেলে সিরাজুল (২৮) পরিকল্পনা মোতাবেক ওঁত পেতে ছিলো। আরিফ তাকে নিয়ে ভূট্টা ক্ষেতে পৌঁছুলে জুয়েল ও সিরাজুল জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল স্থির চিত্র ও ভিডিও’র মাধ্যমে ধারণ করে রাখে। পরে প্রতারক প্রেমিক আরিফ তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে স্বর্ণের গয়না কেড়ে নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় তাকে ভূট্টাক্ষেতে ফেলে রেখে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায় ধর্ষকরা। যাওয়ার সময় এ ঘটনার কথা ফাঁস করলে ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় হয়।
ঘটনার দুই দিন পর স্বর্ণের গহণা ফেরত দেয়ার কথা বলে আবারও ওই তরুণীকে উপজেলার লক্ষ্মীপুর ব্রীজের নিকট দেখা করতে বলে আরিফ। মঙ্গলবার বিকেলে সে তার পরিবারের সহায়তায় লক্ষ্মীপুর ব্রীজের ওপর গেলে এলাকাবাসী ধর্ষক আরিফকে আটক করে গণপিটুনী দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। ধর্ষক আরিফ তার দুই বন্ধুকে নিয়ে পরিকল্পিকতভাবে ওই এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছে বলে পুলিশের নিকট প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে সে স্বীকার করেছে।
এ ব্যাপারে জীবননগর পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফতাব উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষক আরিফকে সমাজের মানুষ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
জানতে চাইলে জীবননগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে মঙ্গলবার রাতে তিন জনের বিরুদ্ধে থানাতে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটক আরিফকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। জুয়েল ও সিরাজুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
শীর্ষনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন