ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পরকিয়া সন্দেহে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার এক গৃহবধূকে গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিবেশি টুকুনি বেগম এবং তার মা হাবিলা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের সোলেমান মন্ডলের স্ত্রী সেলিনা আক্তারের (৩০) সাথে প্রতিবেশী শহিদ মিয়ার সাথে পরকিয়ার সন্দেহে শহিদ মিয়ার স্ত্রী টুকুনি বেগম ও তার মা হাবিলা আক্তার শনিবার সকালে গৃহবধূ সেলিনা আক্তারকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায় এবং তাকে ঘরে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
এমনকি নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ঘটনার পরপরই ভিডিওচিত্র ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মধ্যমে ছেড়ে দেয়।
এরপর খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। নারী কর্তৃক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও দেখে নানাজন নানা রকমের মন্তব্যের পাশাপাশি প্রকাশ্যে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, নির্যাতিতা গৃহবধূকে টুকুনি বেগম ও হাবিলা আক্তারসহ অন্যরা মাথার চুল কেটে, নাকে-মুখে কালি মেখে, গলায় জুতার মালা পড়িয়ে লাঠিপেটা করতে করতে রাস্তায় ঘুরাচ্ছে। নির্যাতনের সময় গৃহবধূর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানেও রক্তাক্ত জখম করা হয়।
নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী সোলেমান মন্ডল দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম জানান, নির্যাতিতা গৃহবধূর শরীর এবং গোপনাঙ্গে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুস্থ হতে সময় লাগবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ময়মনসিংহের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এস এ নেওয়াজী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী সোলেমান মন্ডল বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িত শহিদ মিয়ার স্ত্রী টুকুনি বেগম এবং তার মা হাবিলা আক্তারকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত গৃহবধূ সেলিনা আক্তারের জবানবন্দী গ্রহণ করেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন