১৯৯৪ সালে আনসার বিদ্রোহে ৬৭৪ জন চাকরিচ্যুত সদস্যকে পুনরায় চাকরিতে বহালের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আনসার বিদ্রোহে অংশ নেওয়ার অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়াদের মধ্যে যাদের বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা এখনো আছে এমন আরো ৬৭৪ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে যাদের চাকরির বয়স শেষে হয়ে গেছে বা শারীরিক-মানসিকভাবে চাকরি করতে অক্ষম তারা যতদিন চাকরি ছিলেন ততদিনের পেনশন সুবিধা দিতে বলেছেন আদালত।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রোববার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আনসার সদস্যদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, অ্যাডভোকেট সাহাবুদ্দীন খান লার্জ ও অ্যাডভোকেট রাশেদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সূচীরা হোসাইন।
এর আগেও দুই দফায় হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ১ হাজার ৭৩৬ জন চাকরিচ্যুত আনসার সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়, যা পরবর্তীকালে বিদ্রোহের রূপ নেয়। পরে সেনাবাহিনী বিদ্রোহ দমন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ্ ঘটনার পর কিছু সংখ্যক আনসার সদস্য পলাতক হন। এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে বিদ্রোহে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ হাজার ৪৯৬ জন আনসার সদস্যকে অ-অঙ্গীভূত (চাকরিচ্যুত) করা হয়। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে মামলার অভিযোগ থেকে আনসার সদস্যরা খালাস পান।
২ হাজার ৪৯৬ আনসার সদস্যের মধ্যে ১ হাজার ৭৩৬ জন চাকরিচ্যুত আনসার সদস্য চাকরিতে পুনর্বহাল ও প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত বিভিন্ন সময়ে রুল জারি করেন।
সেই ধারাবাহিকতায় আদালত আজ ৬৭৪ জন চাকরিচ্যুতকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন।
মুহিত-বি চৌধুরী পাল্টাপাল্টি
‘অবসর’ গ্রহণ করা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে জড়িয়েছে পড়েছেন দেশের দুই প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তারা হলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। দুজনই পরস্পরকে অবসর গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।
গত শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয় পরিচালনায় ব্যর্থ দাবি করে অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। পরদিন এক অনুষ্ঠানে তার এই বক্তব্যের জবাব দেন অর্থমন্ত্রী।
রবিবার অগ্রণী ব্যাংকের একটি অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন,‘আজ (শনিবার) সকালে খবরের কাগজে দেখলাম আমাদের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘দুজন মন্ত্রী দেশের কিছু কাজ করেছেন। এখন যদি তাদের অবসর না দেন, নিরাপদ মন্ত্রণালয়ে কোথাও পাঠিয়ে দেন।’ সে দুজন হলেন- একজন আমার বন্ধু শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এবং আমি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমার তখন মনে হয়েছিল আজকে এখানে এসে বক্তৃতা করব অবসরের ওপরে। অবসরটা কখন করা উচিত, কীভাবে নেয়া উচিত। আরেকটি বিশেষ কারণ হলো- সত্যিকারভাবেই আমি এ বছরের ডিসেম্বর মাসেই অবসরে যাব। অবশ্য বদরুদ্দোজার বোধহয়, সে রকম অবসরে যাওয়া নিয়ে কোনো ধারণা নেই। সুতরাং তাকে উপদেশ দিতে চেয়েছিলাম- জীবনে একটি সময় আসে তখন অবসর নেয়া আমাদের জন্য ভালো।’
অর্থমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বি. চৌধুরী রবিবার গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দেন। এতে তিনি বলেন, ‘মাননীয় অর্থমন্ত্রীর অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত সম্বলিত বক্তব্য দেখেছি। মাননীয় অর্থমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী দুজনেই গুণী মানুষ, এ ব্যাপারে আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সমালোচনা করা ভালো নয়।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী তার অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত সম্বলিত বক্তব্যে পরিশেষে আমাকেও অবসর গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। এই ব্যাপারে আমার বক্তব্য সুস্পষ্ট, যেদিন আমি দেখবো আমার বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ডে দেশের মানুষের কোনো ক্ষতি হয়েছে সেদিন আমি নির্দ্বিধায় ও আনন্দে অবসর গ্রহণ করবো। নীতির প্রশ্নে পদত্যাগ করার অভ্যাস আমার আছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন