সড়কের একটু পর পর তোরণ। তাতে রঙ-বেরঙের ব্যানার আর ফেস্টুন। রাতে চোখে পড়ছে দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা। সব আয়োজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। আগামী বৃহস্পতিবার তার জনসভাকে ঘিরে এভাবেই সাজানো হয়েছে পুরো রাজশাহীকে।
শুধু রাজশাহী মহানগরী নয়, শহর ছেড়ে গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে এমন সাজ সাজ রব। সবখানেই বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে সফল করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যস্ত সরকারি বিভিন্ন দপ্তরগুলোও।
জনসভায় যোগ দিতে সড়কপথে সাধারণ মানুষ আর নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সরকারের মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় নেতারাও রাজশাহী আসবেন। তাই সংস্কার করা হচ্ছে সড়কগুলোও। পাশাপাশি চলছে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। সড়কের দু’পাশে চলছে দেয়াল লিখন। এছাড়া জনসভা সফল করতে মাইকিংও চলছে জোরেশোরে।
এদিকে জনসভার জন্য মাঠ প্রস্তুতের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। এরই মধ্যে মাঠে মাইক বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। মাঠের ইট-সিমেন্টের স্থায়ী মঞ্চের সামনে কাঠ বসিয়ে নৌকার আদল দেওয়ার কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। রঙিন কালিতে মাঠের চারপাশে দেয়াল লিখনের কাজ চলছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত থেকে তা পর্যবেক্ষণ করছেন। এরই মধ্যে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের একটি দল এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠ পরিদর্শন করেছেন। জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখেছেন তারা।
শহর ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় শোভা পাচ্ছে নৌকা প্রতীক সম্বলিত বিশাল বিশাল তোরণ। জনসভাস্থল ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানের আশপাশের এলাকায় তোরণের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর বাইরে পুরো নগরীর বিভিন্ন সড়কগুলোতে একটু পর পরই তোরণ নির্মাণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসব তোরণে সাঁটানো হয়েছে বিভিন্ন ব্যানার। স্থানীয় এমপি, আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা তাদের ছবি দিয়ে এসব ব্যানার লাগিয়েছেন। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও শরিক হয়েছে এই প্রচারণার কাজে।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলছেন, সব আয়োজন প্রধানমন্ত্রীর জন্য। দলের নেতাকর্মীরা স্বতস্ফূর্তভাবে এসব তোরণ নির্মাণ করেছেন। আমাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে জনসভায় অংশগ্রহণ করানো। এ জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের খবর সাধারণ মানুষকে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাইকিং তো চলছেই।
জানা গেছে, সাত বছর আগে এই মাদ্রাসা ময়দানেই এক জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার জনসভায় বক্তব্য দেয়ার আগে তিনি রাজশাহীর ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। জেলার আরও উন্নয়নের স্থার্থে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হবে আরও ৯টি। এছাড়া ব্যবসায়ী ও সামাজিক সংগঠনের নেতারাও আলাদা আলাদাভাবে তাদের দাবিনামা প্রস্তুত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই আগমনে দলের নেতাকর্মীরাও উচ্ছ্বসিত বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু শহর নয়, জেলার প্রতিটি পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়নকে সাজিয়ে তুলেছেন নেতাকর্মীরা। তাদের এই উদ্দীপনা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সহায়ক হবে।
প্রায় সাত বছর পর আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা রাজশাহী মহানগরের ভেতরে কোনো জনসভায় যোগ দিচ্ছেন। তবে এর আগে ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর বাগমারা ও ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চারঘাটে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেন তিনি। সর্বশেষ গেল বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর পবায় দলীয় জনসভায় হাজির হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তখনও নেতাকর্মীদের মাঝে উদ্দীপনা দেখা দিয়েছিল। সেজে উঠেছিল পুরো রাজশাহী।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন