নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার হাটপুকুরিয়া ঘাটলাবাগ ইউনিয়নের ইয়াছিন হাজীর বাজারসংলগ্ন স্থানে পুলিশ পরিচয়ে এক কিশোরীকে (১৬) তুলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার ১১ দিন পার হলেও পুলিশ এ পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ দিকে কিশোরীর বাবা অভিযোগ করছেন, যুবলীগ নেতা শরীফ মামলা তুলে নিতে তাদের হুমকি দিচ্ছে।
ভিকটিমের বাবা বলেন, ঘটনার কয়েকদিন আগে ৭ ফেব্রুয়ারি তার মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী (১৫) সাহপুর গ্রামের ইয়াছিন হাজীর বাজারসংলগ্ন তার মামাবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৮ ফেব্রুয়ারি রাত দেড়টায় মজিবুর রহমান শরীফের নেতৃত্বে কয়েকজন গিয়ে পুলিশের পরিচয় দিয়ে শহিদের ঘরের দরজা খুলতে বলে। কিছুক্ষণ ধাক্কাধাক্কির পর কোনো সাড়া না পেয়ে তারা ঘরের দরজা-জানালা ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় নিরুপায় হয়ে তার মামী দরজা খুলে দেন। পরে হামলাকারীরা তার মেয়েকে ঘুম থেকে তুলে তার ভোটার আইডি কার্ড ও জন্মনিবন্ধন দেখাতে বলে। সে এগুলো না দেখাতে পারায় তারা তাকে জোরপূর্বক একটি মোটরসাইকেলে তুলে একটি বাগানে নিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে এবং পরে চোখ বেঁধে বাড়ির পাশের সড়কে ফেলে যায় এবং এই ঘটনা কাউকে বললে পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকিও দিয়ে যায়।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার ১১ দিন পার হলেও একজন আসামিকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ দিকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রতিদিনই আসামিরা তাদের মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে আসছে। বর্তমানে তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
কিশোরীর মা বলেন, তিনি বাদি হয়ে ঘটনার পরপরই চাটখিল থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। পরে অনেক ঘুরাঘুরির পর ১১ ফেব্রুয়ারি চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা ইকবাল বাহার শরীফের নাম বাদ দেয়ার শর্তে মামলা নিতে রাজি হয়। পরে ধর্ষিতার পরিবার বাধ্য হয়ে শরীফকে বাদ দিয়ে অন্য দুই আসামি জামাল ও কামালের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে। মামলা হওয়ার এত দিন পার হলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ দিকে কিশোরীর বড় ভাই অভিযোগ করছে, যুবলীগ নেতা শরীফ মামলা তুলে নিতে তাদের হুমকি দিচ্ছে। আর মামলা তুলে না নিলে তাদের পরিবারের সবাইকে আগুনে পুড়ে মারার হুমকি দিয়েছে।
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল আনোয়ার ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করলেও মামলায় প্রধান আসামির নাম বাদ দেয়ার কথা স্বীকার করছেন না। তিনি বলেন, বাদি যাদের নাম দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হয়েছে।
মামলা গ্রহণ না করতে চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ার জানান, তিনি ভিকটিমের পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছেন। তবে আসামিদের ঠিকমতো শনাক্ত করতে না পারায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন