রংপুরের সাবেক মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে বিকেল ৩টা ৪৪টা মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুণ আরটিএন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন তিনি।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঝন্টুকে রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার পর তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকায় আনা হয়।
এটি রংপুরের সর্বস্তরের জনগণের জয়: নবনির্বাচিত মেয়র মোস্তফা
‘এটি রংপুরবাসীর জয়। রংপুরের সর্বস্তরের জনগণের জয়। এটা ব্যক্তি মোস্তফা বলে কোনো বিষয় না। ব্যক্তি মোস্তফা সামান্য একটা মানুষ। তাকে যারা সম্মানিত করল বিজয়টা তাদের।’ বলে মন্তব্য করেছেন রসিক নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে নিয়ে বিজয়ী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শহরের কাছারিবাজার এলাকায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে কেন্দ্রভিত্তিক বেসরকারি এই ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার সুভাষ চন্দ্র সরকার। এরপর নির্বাচনে জয়ের প্রতিক্রিয়ায় জাপা প্রার্থী এসব কথা বলেন।
লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আরো বলেন, ‘রংপুরে কোনও দলীয় বিভেদ থাকবে না। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে কাজ করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি চাইব, সরকার ও আমার নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহযোগিতা নিয়ে, দাতা সংস্থা প্লাস রিলেটেড যে কর্মকর্তারা আছেন তাদের সাথে যোগাযোগ, সেতুবন্ধ তৈরি করার মাধ্যমে আগামী দিনে রংপুরকে একটি উন্নত নগরী গড়ার প্রত্যয় আমার আছে।’
নবনির্বাচিত রসিক মেয়র মোস্তফা বলেন, ‘আমার চ্যালেঞ্জটা হলো, প্রথম নাগরিক সুবিধাটা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে আমার যে চ্যালেঞ্জ অন্যতম হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। সেকেন্ড কাজ হলো জলাবদ্ধতা নিরসনে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া। থার্ড কাজ হলো যানজট নিরসন করার জন্য পরিকল্পনা। আমার ফোর্থ কাজ হলো রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে ডিসেন্ট্রালাইজ করে দিয়ে সাধারণ মানুষের যে সেবাটা সিটি করপোরেশন থেকে পায় তা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া।
মোস্তফা আরো বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে আছে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে আছে। আমার নির্বাচনী ইশতেহারে ডিটেইলস আমি উপস্থাপন করেছি। আমি অত্যন্ত আশাবাদী। সবার সঙ্গে সেতুবন্ধ তৈরি করার মাধ্যমে আগামী দিনে সুন্দর রংপুর গড়ার স্বপ্ন আমার আছে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমি মিডিয়াসহ সবার সহযোগিতা চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে নবনির্বাচিত রসিক মেয়র বলেন, ‘আমি নিজে ৪৪টি কেন্দ্র অবজার্ভ করেছি। নির্বাচন খুব সুষ্ঠু হয়েছে।’
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ঝন্টুর ছেলে হিমন বলেন, ‘বাবা আজ কথা বলবেন না। কাল তিনি সবার সঙ্গে কথা বলবেন।’
প্রসঙ্গত, রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের নতুন মেয়র হয়েছেন লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ঘোষিত ১৯৩ কেন্দ্রের সবগুলোর বেসরকারি ফল অনুযায়ী তার প্রাপ্ত ভোট ১,৬০,৪৮৯। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র সরফুদ্দিন উদ্দিন ঝন্টু পেয়েছেন ৬২,৪০০ ভোট। দু’জনের ভোটের ব্যবধান ৯৮ হাজার ৮৯। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা পেয়েছেন ৩৫,১৩৬ ভোট।
ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল মোস্তফার। তিনি দলের রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রংপুর, নির্যাতনের শিকার হন মোস্তফা। ২০০৯ সালে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দলের সমর্থন না পেলেও ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম সিটি নির্বাচনে তিনি প্রায় ৭৮ হাজার ভোট পান। মোস্তফার জন্ম ১৯৫৯ সালে। ১৯৭৯ সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর কিছুদিন শিক্ষকতা করে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন