বিভিন্ন ঘটনার ধারাবাহিকতায় সারাদেশজুড়ে চলছে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন। বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থায়, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদগুলোতে জনবল নিয়োগে কোটা থেকে নিয়োগ পাচ্ছেন ৫৫ শতাংশ প্রার্থী। বাকী ৪৫ শতাংশের নিয়োগ মেধার ভিত্তিতে। ওই ৫৫ শতাংশ কোটার মধ্যে রয়েছে; ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতী-নাতনী, ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা এবং ৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী ও অন্যান্য কোটা। তবে কোটাধারী কেউ মেধা তালিকায় ঢুকে পড়লে তার নিয়োগ মেধা কোটাতেই হয়ে থাকে। সেইক্ষেত্রে তার জন্য নির্ধারিত কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয় একই কোটায় থাকা অন্য প্রার্থীকে। আর যোগ্যপ্রার্থী পাওয়া না গেলে, তখন সে পদে কাউকে নিয়োগ না দিয়ে তা সংরক্ষণ করা হয়। এই অবস্থায় আন্দোলনকারীরা কোটার হার ৫৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। এছাড়া বর্তমানে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের বয়সসীমা ৩০ বছর এবং নির্দিষ্ট কিছু কোটার ক্ষেত্রে সেটা ৩২ বছর। ফলে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ। কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে চাকরিপ্রার্থীরা বড় ধরনের আন্দোলনে নামে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে। সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার নানা দিক নিয়ে বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে রোববার ২৫ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ করেছে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থী। পূর্বঘোষিত সময়ানুসারে এই কর্মসূচিতে উত্তপ্ত ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ, রংপুর, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গুরুদয়াল কলেজ, কিশোরগঞ্জ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি আজিজুল হক কলেজ, বগুড়াসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি এই আন্দোলনে আবার উত্তাল সারাদেশ। ভিন্ন ভিন্ন প্রক্ষাপটে পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি দিয়ে কোটা বিষয়ে মত প্রকাশ করছেন সাবেক শীর্ষ আমলা এবং বুদ্ধিজীবীরা। সরকারের দায়িত্বশীল মহলের কাছ থেকে এই আন্দোলনের বিষয়ে অবশ্য এখনও তেমন কোনো মন্তব্য বা আশ্বাস আসেনি। আমাদের আশাবাদ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি যথেষ্ট সম্মানপূর্বক কোটা বিষয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত আসবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন