ভিডিও >> ‘পাসপোর্ট নিতে ভুলে গিয়েছিল রিমন, আমি দিয়ে আসি’
13 Mar, 2018
‘আমার রিমন চলে আসবে। বলেন না, আসবে না? আমি কাল বিকাল থেকে ধৈর্য ধরে আছি। আর তো পারছি না। ও একটু অসুস্থ। আসতে বলুন না তাড়াতাড়ি।’
ভিডিও ..
নিকুঞ্জের বাসায় অনেক আত্মীয়র পাশেই রানার গ্রুপের কর্মকর্তা এসএম মাহমুদুর রহমান রিমনের স্ত্রী ঝর্ণা মাহমুদ ডুকরে কেঁদে বলতে থাকেন উপরের কথাগুলো।
চার দিকে পিনপতন নীরবতায় ঝর্ণা কাঁদছেন আর বিলাপ করছেন। এ সময় তার পাশে থাকা সব মানুষের চোখ গড়িয়ে পড়ছে কান্নার নিঃশব্দ স্রোত।
ঝর্ণা বলেন, ‘কেবল নেপাল যাবার আগের দিনই চট্টগ্রামে সাত দিন অফিসের কাজ শেষে ফিরেছে। তাই নেপাল যাবে বলে রাগ করেছিলাম। বাসা থেকে বেরুনোর আগে আমাকে নেপালের নম্বর দিতে চাইলো। আমি অভিমান করে বলেছিলাম, তোমার নম্বর নিবো না।’
শিশুর মতো ডুকরে ওঠে ঝর্ণা বলেন, ‘ও আমাকে টান দিয়ে বুকে টেনে নিয়েছিল। আমার কপালে চুমু দিয়েছিল। এখন কে আমাকে আর আদর করবে? কে ভালোবাসবে? দুজন দুজনকে ভালোবেসে সাত বছর সংসার করলাম। মনে হয় যেনো এই তো কেবল সাত দিন।’
আমার রিমন আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, ‘আমি বাচ্চাদের মতো করছি। আমাকে নিয়ে আগামী মাসে ভারতের শিমলা আর মানালি যাবে। ও আসবে, আমি অপেক্ষা করছি।’
বাসা থেকে বেরিয়ে গেলেও পাসপোর্ট নিতে ভুলে যান রিমন। ঝর্ণাকে বলেছিলেন পাসপোর্টটা নিয়ে লা মেরিডিয়ান পর্যন্ত এগিয়ে আসতে। ঝর্ণা তাই করেছিলেন। পিয়ন পাঠিয়ে রিমন পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছিলেন স্ত্রীর কাছ থেকে। ফোন করে বলেছিলেন, তুমি রোদে দাঁড়িয়ে থেকো না। তোমার কষ্ট হবে।
‘কে আর এখন আমাকে বলবে, রোদে পুড়ো না, কালো হয়ে যাবে।’
কখনও কাঁদছেন, কখনওবা প্রিয়তম স্বামীর ছবিটির দিকে ছুটে যাচ্ছেন ঝর্ণা। বলছেন, এটা আমাদের বিয়ের ছবি। ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা গত শুক্রবারও একসাথে ছবি তুলেছি।
ঝর্ণা বলেন, ‘ফ্লাইট ছাড়ার আগে আমার রিমন ফোন করে আমাকে বলেছে ফ্লাইট ছেড়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আমি দেখি আমার ফোনে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে, নেপালের নম্বর।’
চোখের পানিতে একাকার ঝর্ণা বলে যান- ‘ও তো সবসময় অফিসের কাজে নেপাল যায়।’ হাতে থাকা ফোনটি তুলে ধরে বলেন, ‘এয়ারপোর্টে নেমেই তো আমাকে ম্যাসেজ পাঠায়। এবার তো পাঠালো না। ও তো নামতেই পারল না। এর আগেই তো ফ্লাইট ব্লাস্ট করল?’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন