শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজারের কাছে নগর হাওলা গ্রামের বাড়িতে একমাত্র শিশুকন্যা প্রেয়সীকে নিয়ে বসবাস করতেন নিহত ফারুক আহম্মেদ দম্পতি। পেশায় ফটোগ্রাফার ফারুক আহম্মেদ পছন্দ করতেন ছবি তোলা ও দেশ-বিদেশ ভ্রমণ।
সোমবার সকালে মামাতো ভাই মেহেদী হাসান ও তার পরিবারকে নিয়ে নেপালে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। দুপুর ১২টার দিকে ফারুক আহম্মেদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের শেষ কথা হয়। এরপরই পরিবার জানতে পারেন ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার খবর। আর এ দুর্ঘটনায় মারা যান ফারুক আহম্মেদ ও তার শিশু সন্তান তামরার প্রেয়সী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ফারুকের স্ত্রী আলমুন নাহার এ্যানী, মেহেদী হাসান ও তার স্ত্রী কামরুন নাহার স্বর্ণা।
সোমবার দুপুরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার বিমানে ছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের নগর হাওলা গ্রামের ফারুক ও মেহেদী হাসান দম্পতির পাঁচ সদস্য। এই পরিবারের তিন বছর বয়সী শিশুকন্যাসহ মারা গেছেন শিশুটির বাবা ফারুক আহম্মেদ। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। একমাত্র ছেলে ও নাতনীকে হারিয়ে ফারুকের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সকাল থেকেই এলাকাবাসী ও স্বজনরা ভিড় করছেন নগর হাওলা গ্রামে ফারুকের পৈত্রিক ভিটায়। আর বারবার ভেঙে পড়ছেন একমাত্র ছেলে নাতনীকে হারিয়ে ফিরোজা বেগম।
নিহত ফারুকের স্বজনরা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ফারুক আহম্মেদের পিতা শরাফত আলী মারা যান। সোমবারের বিমান দুর্ঘটনায় একমাত্র ছেলে ও নাতনীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ এখন মা ফিরোজা বেগম।
আহত মেহেদী হাসানের স্বজনরা জানান, বিমান দুর্ঘটনায় মেহেদী হাসান ও তার স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। কিন্তু এ দুর্ঘটনায় রাতে ফারুক ও তার কন্যা সন্তানের মারা যাবার খবর পেয়েছেন। হতাহতদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা চান এলাকাবাসী ও হতাহতদের স্বজনরা। মাত্র বছর পাঁচেক আগে বিয়ে করেন ফারুক। একমাত্র উপার্জনক্ষম সদা হাসোজ্জ্বল ও বন্ধুবৎসল এই ফারুক ছিলেন পরিবারের সকলের আশা ও ভরসার স্থল। তার অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না এলাকার মানুষ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন