ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে তালাক দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক স্ত্রীর দুপায়ের রগ কেটে দিয়েছে স্বামী। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই স্ত্রী। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছে ওই তরুণীর পরিবার।
বুধবার দুপুরে গুরুতর আহত তরুণীকে ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সকালে উপজেলার স্থানীয় হাবলিপাড়া মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত তরুণী রায়হানা আক্তার নুছরাত (২২) সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের ইসমাঈল মিয়ার মেয়ে ও হাজীপাড়া মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী। আর অভিযুক্ত সাবেক স্বামী কামরুল মিয়া একই গ্রামের মৃত মব্বত আলী ছেলে।
মামলার এজাহারে সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে রায়হানা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের কামরুল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়ের পরিবারের লোকজন জানতে পারেন কামরুল মিয়া একজন মাদকাসক্ত। সে প্রায়ই যৌতুকের জন্য রায়হানাকে মারধর করত। কামরুল পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে রায়হানার পরিবারের কাছে। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় রায়হানার ওপর শারীরিক নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। এসব সহ্য না করতে না পেরে গত সাত মাস আগে রায়হানা আক্তার নুজরাত নিজেই কামরুল মিয়াকে তালাক দেন। এরপর স্থানীয় শাহবাজপুর হাজীপাড়া মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি হয় সে। তবে তালাকের পরও রায়হানা আক্তার নুজরাতের পিছু ছাড়েনি কামরুল মিয়া। মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে রায়হানাকে উত্যক্ত ও ভয়ভীতি দেখাত কামরুল মিয়া। আবার পুনরায় সংসার করার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ১৩ মার্চ সকালে রায়হানা মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে স্থানীয় হাবলিপাড়া মসজিদের সামনে আগে থেকে ওত পেতে থাকা কামরুলসহ আরও কয়েকজন তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। একপর্যায়ে তারা রায়হানার আক্তার নুজরাতের দুপায়ের রগ কেটে দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। বুধবার দুপুরে ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সরাইল থানায় সাবেক স্বামী কামরুল মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
বুধবার বিকালে রায়হানা আক্তার নুজরাতে মা হাজরা খাতুন জানান, ওর (কামরুল) যন্ত্রণায় আমার মেয়ে সংসার ত্যাগ করেছে। তারপরও আমার মেয়েকে শান্তি দিচ্ছে না। আমি আমার মেয়ের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাইল থানার ওসি মো. মফিজ উদ্দিন ভুইয়া জানান, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। আমরা সঙ্গে সঙ্গেই মামলা নিয়েছি। আসামি গ্রেফতারে নিয়মিত অভিযান চলছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন