নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এক নারী গার্মেন্ট শ্রমিকের আত্মহত্যার ঘটনার মামলায় ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে সিয়াম (১৬) নামের এক কিশোর। রোববার দুপুরে ফরাজিকান্দা এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাড়ি থেকে পুলিশ সিয়ামের লাশ উদ্ধার করে।
এর আগে শনিবার রাতে প্রেমিকের পরিবার ও স্বজনদের নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেরে শান্তা আক্তার (১৮) নামে এক গার্মেন্ট শ্রমিক ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
১২ ঘণ্টার ব্যবধানে একই এলাকায় দুইজনের আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। নারী শ্রমিককে সম্ভ্রমহানি করা হয়েছে উল্লেখ করে মামলায় প্রেমিক নাদিম ও ভগ্নিপতি সাঈদসহ সাতজনকে আসামি করা হয়।
সিয়াম ছিল নাদিমের বন্ধু। সিয়াম বন্দরের সোনাকান্দা বেপারিপাড়া এলাকার সাইদুল ইসলামের বাড়ির ভাড়াটিয়া তাজুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া গ্রামের মৃত আবদুল হকের মেয়ে শান্তা আক্তার পরিবার নিয়ে বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা বেপারিপাড়ার আলম মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকত। শান্তা নারায়ণগঞ্জ বিসিকে এক গার্মেন্টসে কাজ করত।
গার্মেন্টকর্মী শান্তার একই এলাকার দ্বীন ইসলাম মিয়ার ছেলে নাদিমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে শুক্রবার রাতে নাদিম শান্তার সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়িতে যায়। নাদিমের পরিবারের লোকজন এ খবর শুনে ওই রাতেই বাড়িতে গিয়ে শান্তাকে পিটিয়ে আহত করে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।
প্রেমিকের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেরে ক্ষোভে ও ঘৃণায় শান্তা আক্তার আত্মহত্যা করে। শনিবার সকালে পুলিশ ওই বাড়ির রান্নাঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ তার উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় মামলায় ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে নাদিমের বন্ধু সিয়াম নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ রোববার দুপুরে সিয়ামের লাশ উদ্ধার করে জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
বন্দর থানার ওসি একেএম শাহীন মণ্ডল জানান, একই এলাকায় দুটি আত্মহত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। প্রেমিক ও তার পরিবার শান্তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। এ ঘটনায় নাদিমসহ সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। অপরটি অপমৃত্যু মামলা নেয়া হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন