মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে একজন স্বাধীনতা বিরোধীর সন্তান, অসাংবাদিককে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এবছর স্বাধীনতা পদক প্রদানের জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নেতৃত্বে কমিটি সাংবাদিকতায় স্বাধীনতা পদক দেওয়ার জন্য শাইখ সিরাজের নাম প্রস্তাব করেছে। সোমবার আবার চূড়ান্ত মনোনয়নে এসেছে তাঁদের নাম। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর তদবিরেই নাম এসেছে শাইখ সিরাজের ।
শাইখ সিরাজ কোনোদিনই সাংবাদিকতা করেননি। তাঁর বাবা ছিলেন একাত্তরের দালাল। শাইখ সিরাজ মুক্তিযোদ্ধাও নন। শুধু তদবিরের জোরে হারুন হাবীব, শফিকুর রহমানের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বাদ দিয়ে ওই কমিটি শাইখ সিরাজের নাম প্রস্তাব করেছে বলে জানা গেছে।
শাইখ সিরাজ মিডিয়াতে আছেন রেজাউল করিম সিদ্দিক রানার পরিকল্পিত ‘মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠান উপস্থাপন করে। বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শাইখ সিরাজ ৯১ সালে ‘মাটি ও মানুষ’ দখল করে নেন। বিএনপির বদান্যতায় তিনি একুশে পদকও বাগিয়ে নেন। এ সময় তিনি ‘জিয়ার সৈনিক’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে শাইখ সিরাজকে ‘মাটি ও মানুষ’অনুষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়া হয়। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদকে সেসময় লিখিত চিঠি দিয়ে শাইখ সিরাজের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেন। এসময় শাইখ সিরাজ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এবং পরবর্তীতে চ্যানেল আই এর পরিচালক হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে শাইখ সিরাজ সরাসরি বিএনপির পক্ষে প্রচারণা চালান। মাহি বি. চৌধুরীর এক অনুষ্ঠানে তিনি বিএনপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে শাইখ সিরাজ অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিতে পরিণত হন। হাওয়া ভবনে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তাঁর উদ্যোগেই চ্যানেল আইতে তারেক জিয়ার সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়।
২০০৮ এ আওয়ামী লীগ এলে রাজাকারপুত্র খোলস পাল্টাতে থাকেন। এখন তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে গেছেন। চ্যানেল আইতে মন্ত্রীদের ডেকে নানা উপহার দিয়ে ফায়দা হাসিলই তাঁর কাজ। এহেন একজন ব্যক্তির নাম স্বাধীনতা পদকের মতো সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে কীভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে তা এক বিস্ময়। উল্লেখ্য, প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসের আগে এই পদক দেওয়া হয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন