বাবা নবাই বিশ্বাসকে তুলে নেয়ার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান বলেছেন, ‘আমার আব্বা কী অন্যায় করেছেন? ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে কি তিনি অন্যায় করেছেন?’
রাশেদ খান বলেন, ‘ছেলে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলায় কি তিনি অন্যায় করে ফেলেছেন? আজকে জাতির কাছে আমি এর বিচার দিলাম। আমাকে না হয় মেরে ফেলল, আমার আব্বাকে কেন থানায় নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার আব্বাকে কেন পুলিশ গালিগালাজ করল? আমার আব্বা কান্না করতে করতে ফোন দিচ্ছেন। কেন আমাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হলো? আমরা কী অন্যায় করেছি?’
দুপুর পৌনে ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে রাশেদসহ পরিষদের আরো দুই যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর ও ফারুক আহমদকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।
পরে জানা গেছে, মিন্টু রোডে অবস্থিত মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘কথা বলার জন্য কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন নেতাকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছিল। পরে তারা চলে গেছেন।’
ছাড়া পেয়ে সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ বলেন, আমাদের চোখ বেঁধে তুলে নেয়া হলো। একইসঙ্গে আমার আব্বাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে গ্রাম (ঝিনাইদহ) থেকে তুলে নিয়ে থানায় আটকে রাখা হয়েছে। উনাকে ওসি বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করছে। উনার কাছ থেকে স্বীকার করানোর চেষ্টা হচ্ছে- তিনি জামায়াত-শিবির করেন এবং তার ছেলে শিবির করে।
দুপুর আড়াইটার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চরমুরাড়ীদহ গ্রাম থেকে রাশেদের বাবাকে থানায় আনা হয়। ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমদাদুল হক শেখ পরিবর্তন ডটকমকে জানান, নাম-ঠিকানা জানার জন্য তাকে থানায় আনা হয়েছিল। এরপরই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়।
রাশেদ বলেন, আমার আব্বা কোনো অন্যায় করেননি। তিনি একজন দিনমজুর। অনেক কষ্ট করে আমাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছেন। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হইনি।
তিনি বলেন, আমি ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতে এসেছি। আমি একজন সাধারণ ছাত্র। আমি কি সাধারণ ছাত্র হিসেবে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতে পারি না?
এই কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই নেতা বলেন, আজ (কোনো রাজনৈতিক দলে) আমার কোনো পোস্ট নেই। আমি কোনো রাজনীতি করি না। এজন্য কি আমাকে ট্যাগ দেয়া হবে? আমার আব্বাকে থানায় আটকে রাখা হবে? উনাকে গালিগালাজ করা হবে?
তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে কেন এমন করা হচ্ছে? আমরা যখন ন্যায়ের পক্ষে কথা বলছি, তখন আমাদের ফ্যামিলি মেম্বারদের বিভিন্নরকম হেনস্তা করা হচ্ছে। আজকে আমাদের বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের ঠিকানা নেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাসায় হামলা করবে, তাদেরকে গ্রেফতার করবে। আজকে যেমন আমার আব্বাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন