৫ লাখ টাকা না দিলে অস্ত্র ও ইয়াবার মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম ও এসআই শাহাদতের বিরুদ্ধে। পরে ১ লাখ ৪২ হাজার ৫শ টাকা দিয়ে ছাড়া পান চট্টগ্রামের হালিশহর থানার শেখ জসিম আহমেদ।
শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে পাহাড়তলী থানার ওসি ও এসআই’র বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শেখ জসিম আহমেদের স্ত্রী সানজিদা ইয়াছমিন এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সানজিদা ইয়াছমিন বলেন, ‘গত ২ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমার স্বামী নাস্তা করার জন্য বাসার পাশের দোকানে গেলে এসআই শাহাদাত তার গাঁয়ে হাত দিয়ে বলে তোর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। আমার সাথে থানায় যেতে হবে। ওসি স্যার তোকে থানায় যেতে বলেছে। এসময় আমার স্বামীর কাছে থাকা ১২ হাজার ৫০০ টাকা ওই এসআই জোর করে নিয়ে থানায় নিয়ে যান। আমি থানায় গিয়ে ওসির কাছে আমার স্বামীকে ছেড়ে দেয়ার কথা বললে ওসি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে তার রুম থেকে বের করে দেয়।’
‘এরপর এসআই শাহাদত আমাকে বলে- ৫ লাখ টাকা দিলে তোমার স্বামীকে ছেড়ে দেবো। আর যদি বেশি বাড়াবাড়ি করো তাহলে তোমার স্বামীকে অস্ত্র ও ইয়াবার মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটাবো। এই কথা শুনে আমি আবারও ওসির রুমে গেলে তখন ওসি বলে এসব কথা শোনার তার সময় নেই। তোমার স্বামীর বিরুদ্ধে ২০০ জন ব্যক্তির অভিযোগ রয়েছে। এরপর ওই এসআই আমাকে বলে ‘তোমার স্বামীকে ৫ মিনিটের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হবে যদি তুমি এখনই ১ লাখ টাকা দাও। আমরা রাত ১০টার দিকে ওই এসআই’র হাতে ১ লাখ টাকা দিই এবং সে আমাকে ৩টি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।’
সানজিদা ইয়াছমিন বলেন, ‘আমি একজন আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয় দিলেও এসআই থানার বাথরুমের পাশে নিয়ে গিয়ে আমাকে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে থানায় এসি পঙ্কজ বড়ুয়াকে দেখতে পেয়ে তার কাছে ঘটনা খুলে বলার পর তিনি ওসিকে জিজ্ঞাসা করলে ওসি তার কোনো কথার জবাব দিতে পারেনি এবং ৮৮ ধারায় মামলা দিয়ে সকালে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন ওসি।
তিনি বলেন, ‘থানার আরেক এসআই সুনয়ন বড়ুয়াকে ৩০ হাজার টাকা দিলে ওসি আমার স্বামীকে ছেড়ে দেবে। ৩০ হাজার টাকা দিলে আমার স্বামীকে তারা ছেড়ে দেয় তারা।’
জসিম আহমেদের স্ত্রী আরও বলেন, ‘গত ৩ মার্চ সন্ধ্যায় এসআই সুনয়ন বড়ুয়া আমাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় এবং টাকা গ্রহণের কথা কাউকে বললে আমার বিরাট ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি।
পাহাড়তলী থানার এসআই শাহাদতকে ফোন দিলে তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে থানার এসআই সুনয়ন বড়ুয়া ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘টাকা নেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। আমি কোনো টাকা নিইনি। ওসি স্যার সানজিদার ইয়াছমিনের জিম্মায় দিয়ে ছেড়ে দিতে বলেছিলো আমি ছেড়ে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘আটক জসিমকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার ঘটনা একদম মিথ্যা। এসআই শাহাদত তার কাছে ইয়াবা আছে এমন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে থানায় নিয়ে এলে তার কাছে কোনো ইয়াবা না পাওয়ায় রাতে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন