‘বাসায় চাল-নাই ডাল-নাই, কিছু নাই। রান্না করার মতো কিছু নাই। আমরা খাবো কি -এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমার শরীরে গরম পানি মারছে।’ ব্যথায় কাতড়াতে কাতড়াতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি এক সন্তানের মা শাহিনুর বেগম (২৭) কথাগুলো বলছিলেন।
শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জে ঘটনাটি ঘটে।
নারায়ণগঞ্জ রুপগঞ্জ তারাবো হাটিপড়া এলাকায় স্বামী নয়ন মিয়ার নিক্ষিপ্ত গরম পানিতে দগ্ধ হন শাহিনুর। দগ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে দগ্ধ অবস্থায় বিকেলে তাকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
দগ্ধ শাহিনুরের বাবা হযরত আলী জানান, ১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে নয়ন মিয়ার সঙ্গে তার মেয়ে শাহিনুরের বিয়ে হয়। শাহিনুরের নাদিয়া (১০) নামে এক মেয়ে আছে।
তিনি আরও জানান, নয়ন দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকসক্ত। মাদকের টাকার জন্য প্রায়ই শাহিনুরকে মারধর করেন। সকালে শাহিনুর তার স্বামী নয়নকে বাজার নেই বলাতে নয়ন ক্ষিপ্ত হয়ে চুলায় থাকা গরম পানি নিক্ষেপ করেন। এতে শাহিনুরের হাত-বুক-গলাসহ মুখের বেশ কিছু জায়গা ঝলসে গেছে।
ঢামেক পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান, শাহিনুরের শরীরের ৬ শতাংশ পুড়ে গেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মোবাইল ফোনে নয়ন বাংলানিউজকে বলেন, সকালে সাংসারিক বিষয় নিয়ে শাহিনুরের সঙ্গে কথা কাটাকটি হয়। শাহিনুর তখন পিঠা বানাচ্ছিলো। সে ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের গায়ে নিজেই গরম পানি ঢেলে দিয়েছে। আমি নেশা করি না। এলাকাবাসীর কেউ মাদক নেওয়ার প্রমাণ দিতে পারবে না।
শাহিনুরের বাবা হযরত আলী জানান, এ ঘটনায় মামলা করা হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন