বাংলাদেশের কক্সবাজারের অস্থায়ী শিবিরগুলোতে বাস তাদের। গাদাগাদি করে একই ছাদের নিচে থেকে, দুমুঠো খাবার খেয়ে, সদ্যজাত শিশুর কান্না শুনতে শুনতে জীবনের কঠিন বাস্তবতা আঁকড়ে ধরতে শিখছে তারা। মোকাবিলা করতে হচ্ছে একের পর এক প্রতিকূলতা। এদিকে আজ রাত পোহালেই শুরু সাধনার মাস রমজান। জীবনযুদ্ধ নামের অসাধ্য সাধনের মধ্যে সাধনার মাসে নিজেদের কতটুকু গুছিয়ে নিতে পারবেন তা নিয়ে বেশ চিন্তিত ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম।
কেমন ছিল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের রমজান। আর সেখান থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসার পর এখানে কেমন পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে তাদের, বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই এক গল্প।
নিজ দেশে ফেলে আসা জীবনের কথা এএফপিকে জানাচ্ছিল ১২ বছরের শিশু মো. হাশিম। সে জানায়, নিজ ভূমিতে বেশ আনন্দঘন পরিবেশে কাটতো তাদের রমজান মাস। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে বসে সেহরি ও ইফতার করা, পরিবারের কাছ থেকে রমজানের উপহার পাওয়া, সন্ধ্যার আগে সবার সঙ্গে বসে একটু বিশ্রাম, মসজিদে নামাজে যাওয়া এসবের মধ্য দিয়ে বেশ কাটতো সময়গুলো। বলতে গেলে এই মাসটিই ছিল বছরের সেরা সময়।
হাশিম বলে, 'এটা তো আর আমাদের দেশ না, তাই এখানে উপহার আর ভালো খাবারও পাওয়া যায় না।'
'রমজান উপলক্ষে মাছ ও মাংসের মধ্য দিয়ে রোজা ভাঙতাম আমরা। উপহার পাওয়া যেত নতুন পোশাক এবং শরীরে মাখা হতো আতর। আমরা এখানে সেটা করতে পারি না। কারণ আমাদের কাছে অর্থ নেই। আমরা আমাদের নিজ ভূমিতে নেই।'
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শুধু সাহায্যের খাবার আর অর্থের ওপরই নির্ভর করতে হয় হবে জানায় শিশু হাশিম। 'আমরা অর্থ উপার্জন করতে পারি না, কারণ আমাদে সে অনুমতি নেই', বলে সে।
গত বছর ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা। তাদের সবাই বাস করছে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে। এতো কষ্টের মধ্য থেকেও, বাংলাদেশে অন্তত জান যাওয়ার ভয় নেই বলে জানান পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন