নকলে বাধা দেয়ায় নেত্রকোনার কেন্দুয়া ডিগ্রি কলেজের কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক আব্দুল কাদের নয়নের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় হামলাকারীরা কলেজের একটি কক্ষের বেশ কয়েকটি বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিল ভাঙচুর করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন ও পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
এ দিকে ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কলেজের অধ্যক্ষ উত্তম কুমার কর ছয়জনের নাম উল্লেখ করে সোমবার বিকেলে কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার থেকে কেন্দুয়া ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বর্ষ-সমাপনী পরীক্ষা চলছিল। বেলা ১১টায় বাংলা প্রথম পত্রের উত্তরপত্র বিতরণের পরপরই মোশারফ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন উছৃঙ্খল শিক্ষার্থী তাদের বিনা বেতন ও বিনা ফিতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং নকলের সুযোগ দেয়ার দাবি তোলে। এ সময় কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল কাদের নয়ন এতে বাধা দেন। পরে ওই শিক্ষার্থীরা কক্ষ থেকে গণ্ডগোল করে বের হয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর লাঠিসোটা নিয়ে একই কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী আপেল মাহমুদ স্নাতক তৃতীয় বর্ষের রনি, একাদশ শ্রেণির জানু মিয়া, আজাহারুলসহ বেশ কিছু শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের নিয়ে পরীক্ষা কক্ষে ঢুকে শিক্ষক আব্দুল কাদেরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে কক্ষের বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুরসহ পরীক্ষার্থীদের বেশ কিছু উত্তরপত্র ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় শিক্ষার্থী ও অন্য শিক্ষকরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা চলে যায়। হামলায় আহত শিক্ষক নয়নকে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ জরুরি সভা ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করে।
কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আব্দুল মান্নান ভূইয়া জানান, ওই উছৃঙ্খল ছাত্ররা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সময় কলেজে ঝামেলা সৃষ্টি করে। তাদের নকল করতে বাধা দেয়ায় আজ শিক্ষককে মারধর ও কলেজে ভাঙচুর চালিয়েছে। এদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা ও ক্লাস বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া কলেজ কতৃপক্ষ তাদের ছাত্রত্ব বাতিলের বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে।
কলেজের অধ্যক্ষ উত্তম কুমার কর জানান, এ বিষয়ে ছয়জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০ জনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি স্থানীয় এমপি ইফতেকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুকেও জানানো হয়েছে।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন